তিন সপ্তাহে আত্মহত্যা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ৭ শিক্ষার্থী

আত্মহত্যা করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থী
আত্মহত্যা করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা কমছেই না। মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আত্মহত্যার তালিকায় নাম লিখিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ৭ শিক্ষার্থী। গত ১১ মার্চ থেকে সর্বশেষ রোববার (৩১ মার্চ) আত্মহত্যার মিছিলে যোগ দিয়েছেন তারা।

যেসব শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একজন প্রাক্তন ছাত্রসহ দু’জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। একজন করে রয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি), পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি), ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এবং আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

এসব শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রধান কারণ হিসেবে পাওয়া গেছে প্রেমঘটিত কারণ, সম্পর্কের টানাপড়েন, হতাশায় ভোগা, সামাজিক ও আর্থিক চাপ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। সর্বশেষ রবিবার ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আদ্রিতা বিনতে মোশারফের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে কী কারণে ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন, সে বিষয়ে পরিবার তেমন কিছুই জানাতে পারেনি।

এসব শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রধান কারণ হিসেবে পাওয়া গেছে প্রেমঘটিত কারণ, সম্পর্কের টানাপড়েন, হতাশায় ভোগা, সামাজিক ও আর্থিক চাপ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। সর্বশেষ রবিবার ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আদ্রিতা বিনতে মোশারফের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তিন সপ্তাহে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনাটি। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজ সহপাঠী এবং সহকারী প্রক্টরকে দায়ী করে গত ১৫ মার্চ কুমিল্লায় নিজ বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। জানা যায়, সহপাঠীর নিপীড়ন এবং সহকারী প্রক্টরের অসহযোগিতামূলক আচরণে বাধ্য হয়ে তিনি এ পথ বেছে নেন।

এর আগে গত ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ সেশনের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ফরিদপুরের নিজ বাড়িতে আত্মহননের পথ বেছে নেন। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তার বন্ধুরা জানান, চাকরি না হওয়ায় হতাশায় ছিলেন তরিকুল। ক্যারিয়ার সমস্যা এবং মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত ছিল। এ নিয়ে পারিবারিকভাবেও কিছুটা সমস্যায় ছিলেন তিনি।

গত ১৪ মার্চ রাজধানীর মিরপুর থেকে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির জহিরুল ইসলাম হিরু নামের এক ছাত্রের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে দূরত্ব ছিল তার। উচ্চশিক্ষার জন্য বেশ কয়েকবার কানাডা যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে বারবার ভিসা প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন তিনি। 

বাবার সঙ্গে অভিমান করে ২১ মার্চ রাতে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এস এম জাকারিয়া জামি। পরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।

আরো পড়ুন: ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি

এর আগে ১৭ মার্চ গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী দেবশ্রী রায়। পারিবারিক কলহের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানা যায়। আত্মহত্যা করার আগে দেবশ্রী তার মাকে ফোন দিয়ে সাংসারিক জীবনের কষ্টের কথা জানান। তার স্বামী ভালো মানুষ নয় এবং তাকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো বলেও জানান।   

এরই কিছুদিন পর ২৫ মার্চ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী শারভীন সুলতানা মীম ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

শারভীন সুলতানা মীম মেহেরপুরের সালদা থানার গাংনী উপজেলার সালদা এলাকার আজিজুল ইসলামের মেয়ে। মিম পাবিপ্রবির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ