লাইব্রেরিতে পড়তে এসে মারামারিতে জড়ালেন ঢাবির দুই ছাত্রী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের দুই নারী শিক্ষার্থীর মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সকালে হলের ঝামেলাকে কেন্দ্র করে লাইব্রেরিতে পড়তে এসে রুকাইয়া খাতুন নামক এক নারী শিক্ষার্থীর উপর হামলা করেছে হাসনা হেনা তমা নামক আরেক শিক্ষার্থী। তবে অভিযুক্ত হাসনা হেনা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়।

সোমবার (৪ মার্চ) দুপুর ১ টা ১৫ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, রুকাইয়া খাতুন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি রোকেয়া হলে থাকেন। এবং অভিযুক্ত তমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১ সেশনের বলে দাবি করছেন।

দুপুরে লাইব্রেরিতে পড়াকালীন তমা তাকে রাগান্বিত স্বরে তার সাথে নিচে যাইতে বলে এবং সকালে হলের ঝামেলার বিষয় সম্পর্কে কথা বলতে চায়। রুকাইয়া নিচে যেতে না চাইলে তাকে থাপ্পর মারে তমা। পরবর্তীতে তার চুল ধরে তার মাথা বেঞ্চির উপর বাড়ি দেয় এবং মারতে থাকে। এমতাবস্থায় অন্যান্য শিক্ষার্থীরা মিলে তাদেরকে থামিয়ে প্রক্টরের কাছে নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে  রুকাইয়া খাতুন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন,  সকালে উনি আমাদের হলে নাস্তা করেন মাঝে মাঝেই। আজও করছিলেন। যেহেতু আমাদের হলে লাইন ধরে খাবার নিতে হয় আমরা লাইনেই ছিলাম। প্রথমত উনি লাইন ভেঙেছেন দ্বিতীয়ত উনি বেশি খাবার খেয়ে যখন ২০ টাকা দিচ্ছিলেন আমি সেটার প্রতিবাদ করায় উনি আমার উপর রেগে যান। পরবর্তীতে এটা নিয়ে আর কিছু ঘটেনি। কিন্তু লাইব্রেরিতে আসার পর তিনি আমাকে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য নিচে ডাকলে আমি বুঝতে পারি তিনি রাগান্বিত এবং আমি যেতে না চাইলে আমাকে সেখানেই মারধর করেন। এ এই ঘটনার বিচার চাই।

প্রত্যক্ষদর্শী সংস্কৃত বিভাগের সৈয়দ পলাশ  দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি দেখলাম যে দুই-একটা কথা বলেই মার শুরু করলেন রুকাইয়াকে। চড়-থাপ্পর, চুল ধরে বেঞ্চির উপর ধাক্কা দেওয়া, টেবিলে উপর ফেলে দেওয়াসহ অনেক মারধর করছিলেন। দেখে মনে হচ্ছিলো তিনি মারামারি করা তে খুব অভিজ্ঞ। 

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, উনি মাঝে মাঝেই লাইব্রেরিতে ঝামেলা করেন। উনার স্বামী ম্যাজিস্ট্রেট এই পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করেন। কেউ বাধা দিতে গেলে তার প্রতি রাগান্বিত স্বরে কথা বলেন। চেয়ার, বাথরুম,  পড়ার টেবিল সবকিছু নিয়ে তিনি ঝামেলা করতেন। এজন্য তাকে সাইন্স লাইব্রেরি থেকে একবার বের করে দেওয়া হয়েছে।

এমন ঘটনা নতুন নয় বলে আরেক ভুক্তভোগী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের এক নারী শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তিনি মাঝে মাঝেই নামাজের জায়গায় নোংরা করে রাখতেন, বেসিন নোংরা করতেন। এটা নিয়ে সবার ক্ষোভ উনার প্রতি। আমি এটা নিয়ে উনাকে কয়েকবার বলেছিলাম। এরপর একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে আমার উপর এগ্রেসিভ হয়। আমাকে মারতে চায়, নিচে যাইতে বলে। আমি বুঝতে পারছিলাম উনার সম্মানবোধ বলে কিছু নাই তাই আমি ক্ষমা চেয়ে চলে আসি।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। অভিযুক্ত নারীও মানসিক হতাশায় ভূগছে। আমি তার স্বামীকে বলেছি তিনি একটা লিখিত দিয়ে যাবেন তার স্ত্রী আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে না। এবং যাকে মারছে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে চলে যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ