গবেষণা কেন্দ্র নেই রাবিতে, বিভ্রান্তিকর তথ্য বলছে প্রশাসন

রাবি
রাবি  © সংগৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো গবেষণা কেন্দ্র নেই। খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন ফেসবুক পেজে এই তথ্যটি ছড়িয়ে যায়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ইউজিসির এই তথ্যটিকে বিভ্রান্তিমূলক ও অসত্য বলে আখ্যায়িত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন খবরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, দেশের অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গবেষণা কেন্দ্রের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মাহফুজ আল আমিন লিখেছেন, ‘একটি ভুল তথ্য পরিবেশন করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। কোন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে রাবিতে গবেষণা কেন্দ্র নেই? গবেষণা কেন্দ্র বলতে তাঁরা কী বুঝায় সেটাও জানা দরকার। তথ্যটি যদি ভুল হয়ে থাকে তাহলে রাবি কর্তৃপক্ষের অবশ্যই এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। কারণ এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বড় সম্মানহানিকর একটি প্রচারণা।’

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ড. ফেরদৌস জামান এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইউজিসির যে প্রেসক্রাইবড ফর্ম (নির্ধারিত ফর্ম) পূরণ করতে হয়, সে ফর্মে এ বিষয়ে তথ্যটি দেওয়া হয়নি। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তো আমাদের শত্রুতার সম্পর্ক আছে এমন নয়, বরং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই আছে। তাঁরা তথ্য দিলে আমরা কেন তা দেব না?’

দেশবরেণ্য গবেষক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এ বিষয়ে বলেন, ‘ইউজিসি ঠিক কীভাবে গবেষণা কেন্দ্রকে সংজ্ঞায়িত করেছে আমার জানা নেই। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর গবেষণার জন্য স্পেশালাইজড ইন্সটিটিউট রয়েছে। আলাদা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ে আমাদের এখানে বিভাগভিত্তিক ল্যাবগুলোতেই গবেষণার কালচার রয়েছে।’

দ্যা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স (টোয়াস)-এর সদস্য অধ্যাপক নকীব আরো জানান, ‘একটিও গবেষণা কেন্দ্র নেই’-এমন সংবাদ বা তথ্য মানুষের কাছে ভুল মেসেজ দিবে বলেই আমি মনে করি। রাবির গবেষণার পরিবেশ এবং কাঠামো দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ভালো।

এদিকে রাবির ফিশারিজ বিভাগের গবেষক ও শিক্ষক অধ্যাপক ইয়ামিন হোসেন বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের আওতাধীন ২৫টিরও বেশি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। যতটুকু জানি, জীববিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোতে ভালো মানের ল্যাবের পাশাপাশি শিক্ষকদের আলাদা গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। এটি সত্যি যে, আমরা এগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং গবেষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এগুলো নিয়ে কাজ শুরু করা উচিত। আর্থিক সংকট থাকা সত্ত্বেও আমাদের গবেষকগণ কাজ করে যাচ্ছেন। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমাদের এখানে গবেষণার পরিবেশ এখনও যথেষ্ট ভালো।’

বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এসেছে উল্লেখ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘দেশের অন্যতম প্রাচীন একটি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে অন্তত আমাদের কনসার্ন নেওয়া উচিত ছিল। আমাদের এখানে ৬টি গবেষণা ইন্সটিটিউট আছে—এগুলোর মধ্যে ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ গোটা দেশে আর দ্বিতীয়টি নেই। এছাড়াও বিভাগ ও গবেষকদের তত্ত্বাবধানে গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। গবেষণা কেন্দ্রের সংজ্ঞায়নটি তাহলে কীভাবে করা হলো?’

রাবি উপ-উপাচার্য আরো বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই একটি বুকলেট প্রকাশ করছি—যেখানে আমাদের গবেষণা কেন্দ্র ও ইন্সটিটিউটগুলোর তথ্য বিস্তারিত দেওয়া থাকবে। আমি সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, শুধু ইউজিসির তথ্যই নয়, এসব রিপোর্ট প্রকাশ কিংবা সামাজিক মাধ্যমে লেখার আগে অন্তত আমাদের মতামতটুকু যেন জানার চেষ্টা করা হয়। তা না হলে দেশবাসীর কাছে একটি ভুল মেসেজ যাবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence