ঢাবির বকুলতলা মেতেছে বসন্ত উৎসবে


ঢাবির বকুলতলা মেতেছে বসন্ত উৎসবে
ঢাবির বকুলতলা মেতেছে বসন্ত উৎসবে  © টিডিসি ফটো

প্রকৃতির বুকে বসন্তের আগমন ঘটেছে। তরুণীরা খোঁপায় ফুল ও লাল-বেগুনি শাড়ি পরে মেলায় এসেছিলেন। ছেলেরা এসেছেন পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে। রাজধানী বিভিন্ন জায়গায় বসন্ত উৎসব চললেও প্রধান আকর্ষণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) চারুকলার বকুলতলা।

সেতারে রাগ বসন্ত মুখারী বাদনের মধ্যদিয়ে শুরু হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলার বসন্ত উৎসব। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭ টা ১৫ মিনিটে শুরু হয় জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ এর উদ্যোগে আয়োজিত এবারের ৩০তম "বসন্ত উৎসব”।

সকাল থেকেই চারুকলার বকুলতলায় মানুষের ভীড়। সবাই মেতেছে বসন্ত আমেজে। দেশের অগ্রগণ্য নৃত্য ও সঙ্গীতের দলসমূহ, একক বরেণ্য শিল্পীবৃন্দ, শিশু-কিশোর ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা পরিবেশন করে 'এসো মিলি প্রাণের উৎসবে'। এরপর বসন্ত কথন পর্ব, প্রীতি বন্ধনী বিনিময়, আবির বিনিময় এবং সকাল ১০টায় বসন্ত আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।

বসন্ত কথন পর্বে সভাপতিত্বে আছেন বসন্ত উদযাপন পরিষৎ- এর সভাপতি স্থপতি সফিউদ্দিন আহমদ, বক্তব্য রাখবেন সহ-সভাপতি কাজল দেবনাথ ও সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইটসহ অন্যান্য বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ।

জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষৎ এর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট বলেন, বসন্তের এই আবাহন তো শুধু আমরা করিনি। এটি বাঙালির স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া ছিল। পহেলা ফাল্গুন এলেই হলুদ শাড়ি পরে নারীরা বের হতেন। আমরা এটাকে একটা উৎসবের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা যেভাবে চেয়েছি ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে একটি অসাম্প্রদায়িক, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ সেটার জন্য এরকম উৎসবগুলো অন্যতম। '৪৭ এ আমরা একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র ছিলাম সেটি থেকে '৭১ এ একটা ভাষার রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। সুতরাং আমাদের মনে রাখতে হবে এই ভাষার সাথে জড়িত যত উৎসব সবই আমাদের উৎসব।

সহ সভাপতি কাজল দেব নাথ বলেন, আজ বসন্ত ফুল ফুটুক আর না ফুটুক কোকিল ডাকবে। আমাদের নাতিরা বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়বে আমরা চেষ্টা করছি প্রকৃতির যে বসন্ত সেটিকে নগর জীবনে আনতে।

সভাপতি স্থপতি সফিউদ্দিন আহমদ বলেন, বসন্ত উৎসব আসলে মিলনের উৎসব। এটা আমরা পালন করছি আনুষ্ঠানিক ভাবে কিন্তু বহু আগে থেকেই এটি পালন হতো নানাভাবে। এবার এই উৎসবের সাথে ভালোবাসা দিবস মিলে গেছে। আমরা একই ধরনের এই দুটি উৎসব একসাথে পালন করবো।

বিকেলের পর্ব 'বসন্ত বিকেল' শুরু হবে বিকেল সাড়ে তিনটায় বেঙ্গল পরম্পরার যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে। এ পর্বেও যথারীতি দেশের অগ্রগণ্য শিশু-কিশোর ও ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠির পরিবেশনা, দলীয় সঙ্গীত ও দলীয় আবৃত্তি এবং বরেণ্য একক সঙ্গীত ও আবৃত্তি শিল্পীবৃন্দের পরিবেশনও থাকবে।

বিকেল সাড়ে তিনটায় একযোগে পুরনো ঢাকার বাহাদুর শাহ্ পার্ক ও উত্তরা দিয়াবাড়ীর লেক সংলগ্ন মাঠে বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে "বসন্ত উৎসব-১৪৩০" এর অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ