পদ্ধতিগত ত্রুটিতে প্রত্যাহার জাবির ইমেরিটাস অধ্যাপক নীতিমালা 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ইমেরিটাস অধ্যাপক সংক্রান্ত নীতিমালা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সভায় ইমেরিটাস অধ্যাপক সংক্রান্ত নীতিমালায় পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলমের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থিত একাধিক সদস্য বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে বিগত ১০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক, সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং  বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাদেশ-২০২৩ এ তিনটি শিক্ষক পদে নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হলে তা কিছু সংশোধনীসহ অনুমোদন করা হয়। 

তখন একাডেমিক কাউন্সিলের কোন সুপারিশ না নিয়েই সিন্ডিকেট থেকেই এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বা নীতিমালা প্রনয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ-১৯৭৩ ও স্ট্যাটিউটস লঙ্ঘিত হয়েছে বলে দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যৈষ্ঠ শিক্ষকরা। 

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ জানিয়েছেন, আজকের আলোচনা সভায় অধিকাংশ শিক্ষকই বলেছেন বিষয়টি পদ্ধতিগতভাবে সঠিক হয়নি। এটা ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ এবং সংবিধি অনুযায়ী হয়নি। এতে অধ্যাদেশ লঙ্ঘন হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে উপাচার্য বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন এবং তা প্রত্যাহার করেছেন। 

তিনি জানান, সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সংক্রান্ত সংবিধির মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও আগে সংবিধি তৈরি করতে হবে। এছাড়া যেহেতু এটা সম্পূূর্ণভাবে একাডেমিক কাউন্সিলের বিষয় সেহেতু বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিল হয়ে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদে উত্থাপিত হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থিত আরেক শিক্ষক জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বা নীতিমালা কোন কিছুই চূড়ান্ত না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির ইমেরিটাস অধ্যাপক পদে আবেদন করেছেন। বিষয়টি সভার মধ্যে আলোচিত হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আমরা এমন সম্মানজনক ব্যক্তির কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশা করিনি। ব্যক্তি হিসেবে যিনিই হোন না কেন আমরা আশা করি, নিয়ম নীতি সমুন্নত রেখে এ পদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। 

এ বিষয়ে ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার জানান, এই অধ্যাদেশটি অনুমোদনে সিন্ডিকেটের এখতিয়ার নেই। আমাদের সংবিধিতে যা আছে সেগুলো মিলে হয়তো একটি স্পেসিফিক বিষয়ের জন্য নীতিমালা তৈরি হতে পারে।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টে এই পদটি উল্লেখ ছিল না। সেক্ষেত্রে এটি আগে একাডেমিক কাউন্সিল হয়ে আসতে হবে। একাডেমিক কাউন্সিল যখন সুপারিশ করবে তখন একাডেমিক কাউন্সিল অথবা সিন্ডিকেট একটি প্রস্তাব তৈরি করবে। সেই প্রস্তাবের স্পেসিফিক কিছু অংশ একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশসহ সিনেটে যাবে। পরে সংবিধি গুলো পাস হয়ে গেলে সিন্ডিকেট একটি নীতিমালা তৈরি করবে এবং সে নীতিমালার আলোকে প্রফেসর ইমেরিটাস সহ অন্যান্য উচ্চতর শিক্ষকতার পদগুলোতে নিয়োগ হবে বলেও জানান এই শিক্ষক।


সর্বশেষ সংবাদ