বিসিএস ক্যাডার হওয়ার ইচ্ছে ছিল ঢাবির আত্মঘাতী ছাত্র মঞ্জুর

শেখ মঞ্জুরুল ইসলাম
শেখ মঞ্জুরুল ইসলাম  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে শেখ মঞ্জুরুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে আজ মঙ্গলবার তার জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।

শেখ মঞ্জুরুল ইসলামের বড় ভাই রাজু শেখ বলেন, আমার ভাই একজন মেধাবী ছাত্র ছিল। ২০১৪ সালে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার রাজপাট হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে। পরে ২০১৬ সালে রাজপাট কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়। 

তিনি বলেন, বাংলা বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিল আমার ভাই। আমরা খবর পেলাম আমার ভাই গলায় মাফলার পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে রাতে আমরা ঢাকায় আসি। পরে হাসপাতাল থেকে পুলিশ লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন।

আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

এর আগে গত সোমবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাবির স্যার সলিমুল্লাহ হলের ১৬৫ নম্বর রুমে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন মঞ্জু। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

রাজু শেখ বলেন, আমি একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করি। তার লেখাপড়ার সমস্ত খরচ আমি চালাতাম। গত পরশু (রোববার) মঞ্জুর সঙ্গে আমার মোবাইল ফোনে কথা হয়। সে জানায় ওর কয়েকটি প্যান্ট কিনতে হবে। আমি বললাম ঠিক আছে দু’দিন পরে এসে আমি প্যান্ট কিনে দেবো।

‘‘আমি আরও জিজ্ঞাসা করলাম টাকা-পয়সা আছে কি না? সে তখন জানায় তার কাছে চলার মতো টাকা আছে। কিন্তু আমার ভাইকে প্যান্ট আর কিনে দেওয়া হলো না। তার ইচ্ছা ছিল বিসিএস দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।’’

আরও পড়ুন: ‘হতাশাগ্রস্ত’ ছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থী মঞ্জুরুল

মঞ্জুর আত্মহত্যার পেছনে কোনো কারণ জানা গেছে কিনা জানতে চাইলে রাজু শেখ বলেন, ওর সঙ্গে কথা বলে হতাশায় ভুগছে বা কোনো ধরনের সমস্যায় রয়েছে তা কখনোই বুঝতে পারিনি। কী কারণে আমার ভাই এমন কাজ করল সে বিষয়টি এখনো জানতে পারিনি।

শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) টিপু সুলতান বলেন, গতকাল আমরা মঞ্জুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাই। আজ দুপুরে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। প্রাথমিকভাবে আমরা তার মৃত্যুর কারণ জানতে পারিনি। তার ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, একটি বাটন মোবাইল ও একটি ডায়েরি পরিবারের কাছে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ