চোখে আঘাত পাওয়া রাবির তিন শিক্ষার্থীকে নেওয়া হচ্ছে ঢাকায়

  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে ৯০ জন শিক্ষার্থী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে ওঠায় তাদের অনেকেই আজ সোমবার হাসপাতাল ছেড়েছেন। তবে চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়া তিন শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

এদিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকা পদার্থবিজ্ঞানের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসানকে আজ দুপুরে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, রাকিবুলের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখন তিনি শঙ্কামুক্ত। অক্সিজেন ছাড়াই তিনি কথা বলতে পারছেন। তাঁকে বেলা দুইটার দিকে হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সংঘর্ষের পর আহত অবস্থায় রাতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীকে হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে ভর্তি করা হয়। ওই দিন রাতেই তাঁদের চোখে অস্ত্রপ্রচার করা হয়। তাঁদের মধ্যে তিনজনের চিকিৎসা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আর সম্ভব নয় বলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

এই তিন শিক্ষার্থীর একজন মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আলিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, তাঁর চোখে পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের সেল ও রাবার বুলেটের আঘাত পেয়েছেন। ওই রাতেই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাতেই তাঁর চোখে অস্ত্রপ্রচার করা হয়েছে। প্রথমে চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, রাজশাহীতেই তাঁর চোখের চিকিৎসা হবে। কিন্তু আজ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউটে রেফার্ড করা হয়েছে।

একইভাবে আঘাতে রেটিনার সমস্যা হওয়ার কারণে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র মিসবাউল ইসলামকে। মিসবাউলও জানান, তিনি চোখে পুলিশের রাবার বুলেটের আঘাত পেয়েছেন। ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিনকেও। তিনিও চোখে বুলেটের আঘাত পেয়েছেন বলে প্রথম আলোকে জানান।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ জানান, তিনজন ছাত্রের চোখের ‘ভিট্রিয়ল রেটিনাল ইনজুরি’ রয়েছে। রাজশাহীতে এর চিকিৎসা সম্ভব নয়। এ জন্য তাঁদের ঢাকায় জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউটে পাঠানো হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, এই শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। চিকিৎসার ব্যয়ভারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহন করবে। আইন বিভাগের আরেকজন ছাত্রকেও ঢাকায় নিতে হতে পারে। তাঁর বিষয়টিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে।

গুরুতর আহত আরেকজন ছাত্র মাহফুজুর রহমান চক্ষু বিভাগে চিকিৎসাধীন। ইটের আঘাতে তাঁর চশমার কাচ বাঁ চোখের ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল। অস্ত্রপ্রচার করে কাচের টুকরা অপসারণ করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, রাজশাহীতেই তিনি চিকিৎসাধীন থাকবেন। তাঁরা আশা করছেন, এখানেই তিনি সুস্থ হবেন। এই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আরেক রোগীকে আজ ছুটি দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালের ওয়ার্ডমাস্টার মোশারফ হোসেন জানান, আহত ৯০ জন শিক্ষার্থী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আজ তাঁদের অনেককেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। যেমন ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে আইসিইউ থেকে ফেরা রাকিবুল হাসানসহ মাত্র দুজন রোগী এখন চিকিৎসাধীন থাকছেন। বাকিদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence