ছাত্রকে মারধরের পর ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দিলেন ছাত্রলীগ নেতা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:০৮ AM , আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:৩৫ AM
ছাত্রলীগের দুই নেতার নেতৃত্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) দুই শিক্ষার্থীকে মানসিক নির্যাতন ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি একজনকে মারধর এবং অপরজনকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী ছাত্র তৃতীয় ব্যাচ ও ভুক্তভোগী ছাত্রী পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী সোমবার দুপুরে ইনস্টিটিউটের তৃতীয় ব্যাচের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিফা হক শেফা এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান এই নির্যাতনের নেতৃত্ব দেন। তাঁরা একই ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেছেন, কিছুদিন ধরে তিনি ইনস্টিটিউটের কয়েকজন বড় ভাইবোনের মাধ্যমে ক্রমাগত মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি তাঁর ইনস্টিটিউটের একজন বড় ভাইয়ের সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যান। সেখানে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান, ইতি মণ্ডল, শাহবাজ তন্ময়, আতিফা হক উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সেখানে নানাবিধ অশালীন কথাবার্তা ও অপ্রত্যাশিত অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে থাকেন। পরে তাঁরা আরও নানাভাবে মানসিকভাবে হেনস্তা করতে থাকেন।
লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, রোববার তাঁকে ফোন দিয়ে দেখা করার জন্য আতিকুর ও আতিফা চাপ দিতে থাকেন। বাধ্য হয়ে তিনি তাঁর কয়েকজন সহপাঠীকে নিয়ে বিভাগের সামনের চায়ের দোকানে যান। সেখানে তাঁর চরিত্র নিয়ে নানা রকম গালিগালাজ ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। সঙ্গে থাকা অন্য সহপাঠীদেরও হেনস্তা করা হয়। তাঁকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি এবং ক্যাম্পাসে তাঁর টিকে থাকা অসম্ভব করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
ওই ঘটনার অডিও রেকর্ডে আতিফা হককে বলতে শোনা যায়, ‘ওকে হলে গিয়ে ধরব। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাচের মানুষের সাথে ও ঘুরে বেড়িয়েছে। ওকে প্রোটেকশন দিলে ওর লাইফ আরও দুর্বিষহ করব। ওর ক্যারেক্টার যদি আমি না... তাহলে আমার নাম শেফা না। ওকে যেখানে পাব সেখানে...।’
ওই ছাত্রীর সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া শিক্ষার্থীও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। সোমবার ইনস্টিটিউটে দেওয়া লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছেন, গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল চত্বরে র্যাগিংয়ের একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা আতিকুর রহমান।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের নেতা আতিকুর রহমান বলেন, অভিযোগকারীরা দীর্ঘদিন ধরে সিনিয়রদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে আসছিলেন। পরে তাঁদের ডেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। সেখানে দুয়েকজনকে ধমক দেয়া হয়েছে কিন্তু কাউকে হুমকি বা মারধর করা হয়নি। এছাড়া, এ বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও আতিকা হক শেফার মন্তব্য পাওয়া যায় নি।
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের তৃতীয় ব্যাচের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আকতার বানু বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনও কিছু জানিনা। যদি এ রকম কিছু হয়েও থাকে, তা ডিপার্টমেন্টের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এসব গণমাধ্যমে প্রকাশের মতো ঘটনা নয়।