বিনা অনুমতিতে বিদেশ যাওয়ার ঢাবি শিক্ষিকার শাস্তি

সহকারী অধ্যাপক থেকে প্রভাষকে পদাবনতি, ফেরত দিতে হবে ২৮ লাখ টাকা

  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি না নিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়ে শাস্তির মুখে পড়ছেন এক শিক্ষক। তাকে সহকারী অধ্যাপক হতে প্রভাষকে পদাবনতি দেয়া হয়েছে। একইসাথে ২৮ লাখ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দিতে হবে তাঁর। শাস্তি পেতে যাওয়া শিক্ষক হলেন ড. শাদলী শেহরীন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীব প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

জানা গেছে, ওই শিক্ষকের শাস্তির জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাইবুনাল গঠন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ট্রাইবুনাল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত করে প্রমাণ পেয়ে সহকারী অধ্যাপক থেকে পদানবতি করে প্রভাষক করার সুপারিশ করেছে। 

এছাড়া শিক্ষা ছুটির বন্ড অনুযায়ী শর্ত পূরণ না করায় শিক্ষা ছুটির সময়ে বেতন হিসেবে পাওয়া ২৭ লাখ ৯০ হাজার ৭৬৩ টাকাও তাঁর কাছ থেকে আদায়ের বিষয়ে সুপারিশ করেছে। গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় এ সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। 

নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় এ সুপারিশ গ্রহণ করা হয় বলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন ট্রাইবুনাল ও সিন্ডিকেটেরর একাধিক সদস্য। 

ট্রাইবুনালেরর সুপারিশ ও সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা গেছে, ড. শাদলী শেহরীণ যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে পোস্ট ডক্টর গবেষণার জন্য শিক্ষা ছুটি চেয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেন। গত বছরের ১১ জুলাইথেকে চলতি বছরের ২০ জুলাই পর্যন্ত ১ বছর ১০ দিন ছুটি চান তিনি।

তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি গত বছরের জুনের ১৫ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধান অনুযায়ী তার ছুটির বিষয়টি বিবেচনা জন্য সুপারিশ করে। কিন্তু তিনি ছুটি অনুমোদনের আগেই কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে নিজের সিদ্ধান্তে দেশ ত্যাগ করেন।

এছাড়া, ড. শাদলী শেহরীণ যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি ডিগ্রির জন্য মোট চার বছর তিন মাস ১৫ দিন সবেতনে শিক্ষাছুটি ভোগ করেছেন। ছুটি শেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করে মাত্র ছয় মাস ছয় দিন কর্মরত ছিলেন। কিন্তু তিনি তিন বছর ৯ মাস ৯দিন অর্থাৎ প্রদত্ত বন্ড অনুযায়ী শিক্ষাছুটির সমপরিমাণ সময় বিভাগে কাজ না করায় ২৭ লাখ ৯০ হাজার ৭৬৩ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ড. শাদলী শেহরীনের বক্তব্য জানা যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোনে বার বার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সব শিক্ষক-কর্মকর্তাদের থেকে পেশাদারিত্বমূলক আচরণ, নিয়মনীতির যথাযথ পালনের প্রত্যাশা করে। কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগের একজন শিক্ষক বিনা অনুমতিতে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে যুক্তরাষ্ট্রে গেছে।

তিনি বলেন, আমরা কাউকেই পিএইচডি করতে বিদেশ যেতে নিষেধ করি না, বরং আরও উৎসাহিত করি। কিন্তু সে নিয়মের তোয়াক্কা না করে চলে যাওয়ায় সিন্ডিকেট সভায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে পদবনতি দেয়া হয়েছে। তার ওই সময় ভোগ করা বেতন কর্তন করা হচ্ছে। তবে তিনি এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। 

উল্লেখ্য, ড. শাদলী শেহরীণের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্যের ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। উক্ত ট্র‍্যাইবুনালে আহ্বায়ক ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ. এম. আমির উদ্দিন। অপর দুই সদস্য ছিলেন টেলিভিশন, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া এবং ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence