পুরুষের যে ১০ অভ্যাসে নারীর মানসিক চাপ কমে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

নারীদের জীবনে চাপ যেন এক স্থায়ী সঙ্গী। ঘর, পরিবার, কর্মজীবন—সব সামলাতে গিয়ে তারা প্রায়ই নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে পারেন না। অথচ গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষরা তুলনামূলকভাবে চাপ কম অনুভব করে এবং স্বাস্থ্যবান থাকে। তাদের কিছু আচরণ বা মানসিক গঠন, যা হয়ত অনেকের কাছে ‘উদাসীনতা’ মনে হতে পারে। বাস্তবে দীর্ঘমেয়াদে স্ট্রেস কমাতে অনেক কার্যকর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষদের কিছু অভ্যাস নারীদের মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করতে পারে। নিচে এমন ১০টি অভ্যাস তুলে ধরা হলো—

১. সীমানা নির্ধারণ ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ

পুরুষেরা যখন কোনো ঝামেলায় পড়ে, তখন তারা আগে সবচেয়ে দরকারি বিষয়টা ঠিক করে ফেলে—যেটা সবচেয়ে জরুরি, সেটাই আগে সমাধান করে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা এটাকে বলেন "সাইকোলজিক্যাল ট্রায়াজ"। সহজ করে বললে, তারা ভাবে—শরীর ঠিক আছে তো? বাচ্চারা ঠিক আছে তো? তাহলে বাকি যেটুকু আছে, যেমন ঘরের রং, জামা কী পরবে, কার দাওয়াতে যাবে—এসব তেমন গুরুত্বপূর্ণ না। বাংলাদেশের বাস্তবতায় নারীরাও যদি এভাবে অপ্রয়োজনীয় দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে দরকারি জিনিসে মন দিতে পারেন, তাহলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যাবে।

২. 'না' বলতে শেখা

পুরুষরা প্রয়োজন হলে স্পষ্টভাবে না বলে দেয়। কিন্তু অনেক নারী না বলতে সংকোচ বোধ করেন। আত্মসন্তুষ্টির জন্য হলেও মাঝে মাঝে ‘না’ বলা জরুরি। এতে নিজের জন্য সময় বের করা সম্ভব হয়।

৩. ঘুমের গুরুত্ব বোঝা

কম ঘুম নারীদের মধ্যে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ায়, যা থেকে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। পুরুষেরা স্বল্প সময়ের জন্য পাওয়ার ন্যাপ নিয়ে মানসিক চাপ দূর করতে জানে। নারীদেরও এটা শিখতে হবে।

৪. আবেগ থেকে নিজেকে সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন করা

পুরুষেরা জরুরি সময় আবেগ বাদ দিয়ে বাস্তবতায় ফোকাস করে। নারীদেরও প্রতিটি পরিস্থিতিকে অতিমাত্রায় অনুভব না করে মাঝে মাঝে কিছুটা নির্লিপ্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।

৫. সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে না নেওয়া

নারীরা প্রায়ই পরিবারে সব দায়িত্ব নিজে কাঁধে নেন। কিন্তু পুরুষেরা দায়িত্ব ভাগ করে নেয়। সন্তানদেরও কাজে অভ্যস্ত করতে হবে। তারা রান্না শিখুক, ঘরের কাজ করুক। এতে নারীর চাপ কমবে।

৬. ফলাফলমুখী চিন্তা করা

পুরুষেরা সাধারণত ভাবে—কাজটা শেষ হলে কী লাভ হবে, সেটা আগে দেখা দরকার। কিন্তু অনেক নারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাবতে থাকেন, “যদি এটা হয়, যদি ওটা না হয়”—এইভাবে দুশ্চিন্তার ফাঁদে পড়েন। অথচ যদি শেষ ফলটা মাথায় রাখা যায়, তাহলে অনেক দোটানা, ভয় আর চাপ কমে যায়। সিদ্ধান্ত নেওয়াটাও সহজ হয়।

৭. আতঙ্ক না তৈরি করা

“বস হঠাৎ বললেন, এখনই দেখা করতে চাচ্ছেন”—এমন কথা শুনে অনেক নারী মনে করেন, বুঝি বড় কোনো সমস্যা হয়েছে। অথচ পুরুষেরা আগে চিন্তায় না পড়ে দেখে নেয় আসলে কী হয়েছে। অকারণে নিজে নিজে খারাপ কল্পনা না করলে ভয়-টেনশন অনেকটাই কমে যায়। আমাদের সমাজে অনেক নারী ছোট একটা কথায় বড় দুশ্চিন্তা করেন, অথচ একটু ধৈর্য ধরে ভাবলে দেখা যায়, ব্যাপারটা ততটা সিরিয়াসই না।

৮. নেতিবাচক আত্মকথা এড়িয়ে যাওয়া

পুরুষেরা নিজের ক্ষমতা ও যোগ্যতা নিয়ে সাধারণত আত্মবিশ্বাসী থাকে। তারা নিজের প্রশংসা করতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। নারীদেরও নিজেদের নিয়ে সাহস করে বলতে হবে—“আমি পারি”, “আমার যোগ্যতা আছে”, “আমি ঠিক সামলাতে পারব”। এমন ইতিবাচক কথা নিজের মনেই বারবার বললে ভয়, দুশ্চিন্তা আর অনিশ্চয়তা অনেকটাই কমে যায়। এটা নিজেকে শক্ত রাখার দারুণ একটি উপায়।

৯. মজার কিছু করা ও রিস্ক নেওয়া

পুরুষেরা অনেক সময় কাজকে খেলা বা মজার একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখে—ভাবছে, “দেখি পারি কিনা!” নারীদেরও মাঝে মাঝে এমন সাহসী আর আনন্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। সব কিছুতেই ভয় খোঁজার বদলে একবার চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে। অনেক সময় যেটা ভয় লাগে, সেটা আসলে ততটাও কঠিন নয়। চেষ্টা না করলে সেটা কখনই জানা যাবে না।

১০. সবকিছু নিয়ন্ত্রণে না রাখার মানসিকতা

পুরুষেরা বোঝে, সব সময় সবাই জিতে না। নারীদেরও এই কথা মেনে নিতে হবে—সব কিছু একদম নিখুঁত না হলেও চলবে। পরাজয় মানেই শেষ নয়, এটা একটা শিক্ষা আর অভিজ্ঞতা হিসেবেই নেওয়া উচিত। হার মানার পরেই আবার সামনে এগোনোর শক্তি পাওয়া যায়।

নারীরা যদি পুরুষদের এসব অভ্যাস থেকে কিছু শেখেন—তাহলে মানসিক ভার অনেকটা কমে আসবে। এটি কোনো লিঙ্গভিত্তিক তুলনার উদ্দেশ্যে নয়, বরং একটি বাস্তব দৃষ্টিকোণ—কীভাবে নির্দিষ্ট মানসিক গঠন চাপ সামলাতে সাহায্য করে। জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে শুধু দায়িত্ব নয়, নিজের প্রয়োজন ও মানসিক প্রশান্তিকেও প্রাধান্য দেওয়া জরুরি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence