বসন্তে ত্বকের যত্ন
- আফরিন সুলতানা শোভা
- প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০৭ AM , আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০৭ AM
বিদায় নিতে চলেছে শীত। প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বসন্তে ত্বকেও দেখা যায় পরিবর্তন। ঠান্ডা-গরমের এ সময় ত্বকের বিশেষ পরিচর্যা প্রয়োজন। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতেই বেশি করে ত্বকের যত্ন নেওয়া দরকার। দিনে ও রাতে যেহেতু আবহাওয়ার চরিত্র দুই রকম তাই ত্বকের পরিচর্যাও হতে হবে দু ধরনের। আর এর বড় পরিবর্তনটা করতে হবে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে।
বসন্তে ধুলোবালির পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে সকাল বেলা বের হওয়ার পরেও দেখা যায় চেহারা বিবর্ণ হয়ে উঠেছে। চেহারা বিবর্ণ হওয়া ঠেকাতে মাঝে মাঝে পানির ঝাপটা দেওয়া যেতে পারে। এতে চেহারার ক্লান্তি ভাব কেটে গিয়ে তরতাজা দেখাবে। আর একটি কাজ করা যেতে পারে। পানির ঝাপটা দেওয়ার পর ভালোভাবে মুখ মুছে আবারও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা।
সারাদিন রোদ যেমনই থাক রাতের দিকে কিন্তু ঠান্ডা পরে এখন বেশ। ফলে রাতের ত্বক চর্চার জন্য দিনের চেয়ে একটু ভারী ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে হবে। এ ছাড়া নাইট ক্রিমও ব্যবহার করা যেতে পারে রাতের ত্বক চর্চার জন্য।
সানস্ক্রিন ব্যবহার
অনেকেই মনে করেন সানস্ক্রিন শুধুমাত্র প্রখর গ্রীষ্মেই ব্যবহার করা উচিত। কারণ একমাত্র গ্রীষ্মের সময়ই ত্বক ট্যান হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু বসন্তেও সূর্যের যথেষ্ট তেজ থাকে। ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। যখনই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন তখনই মুখ ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
ছাতা
বাইরে গেলে সরাসরি যেন ত্বকে রোদ না লাগে, সেজন্য ছাতা ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঘরে তৈরি প্যাক
সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ঘরে তৈরি প্যাক ব্যবহার করতে হবে। শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা পাকা কলা বা পাকা পেঁপের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে মুখে ১০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বকে শসা, আপেল ও কমলার রস এবং টক দই এক সঙ্গে মিশিয়ে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন ভালো করে। রাতে টোনার দিয়ে ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করে নিন। টোনার হিসেবে কাঁচা দুধ ব্যবহার করতে পারেন।
পানি পান
শীত ও বসন্তকালে আমাদের পানি খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। কারণ তখন শরীর কম ঘামে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে বেশি পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। পানি শরীরের সমস্ত বিষাক্ত পদার্থকে বের করে দিয়ে ত্বকে সজীবতা যোগায়। যদি গলায় কোনও সমস্যা থাকে তাহলে গরম পানিও খেতে পারেন।
আরও পড়ুন: রান্নায় হলুদ বেশি হয়ে গেলে কী করবেন?
মসুর ডাল
দু’চামচ মসুর ডাল সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে মসুর ডাল বেটে তার মধ্যে অল্প দুধ ও আমণ্ড তেল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই প্যাকটা মুখে মেখে দশ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার পানি দিয়ে ঘষে ঘষে ধুয়ে নিন।
অ্যালোভেরার যত্ন
যাঁদের শুষ্ক ত্বক তাঁরা দিনে দু’বার অ্যালোভেরা জেল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। যাঁদের স্বাভাবিক ত্বক তাঁরাও এটা করতে পারেন।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে স্ক্র্যাব
এজন্য চিনি, লেবুর রস এবং অলিভ অয়েল ও চালের গুঁড়া দিয়ে মাস্ক তৈরি করে নিন। এবার কিছুক্ষণ এই মিশ্রণ দিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন।
গোলাপজল
তৈলাক্ত ত্বকে আর্দ্রতা জোগাতে একটা এয়ারটাইট বোতলে ১০০ মিলি গোলাপ জলের সঙ্গে এক চামচ শুদ্ধ গ্লিসারিন মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। যখনই ত্বকে শুষ্কতাজনিত টান অনুভব করবেন, এই মিশ্রণ তুলোয় করে লাগাবেন।
শসার ব্যবহার
একটা শসা কুড়িয়ে, সেটা থেকে রসটা বের করে এক চামচ চিনি ভালো করে মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। ত্বকে মেখে দশ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। শসার রস ত্বককে হাইড্রেট করে, ফলে ত্বকের পোড়া ভাব দূর করে, ত্বক হয় মসৃণ ও উজ্জ্বল।
নিয়মিত যত্ন নিলেই ত্বকের সজীবতা বজায় থাকবে। নিয়ম মেনে চললেই ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সহজেই আপনার ত্বক খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। এক দিন বা হঠাৎ হঠাৎ একদিন ত্বকের পরিচর্চা করে তেমন কিছু হবে না। ত্বকের পরিচর্চা করা উচিত নিয়মিত। তবে ঘরে ত্বক পরিচর্চা করতে গিয়ে যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।