শীতে পানির পরিপূরক হতে পারে জুস

শীতে রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বকের যত্নে পানীয়
শীতে রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বকের যত্নে পানীয়  © সংগৃহীত

আগমনের বার্তা দিয়েছে শীত। এই পরিবর্তিত পরিবেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের ত্বক। রুক্ষ ত্বকের যত্নে দারুণ কাজ করে কিছু পানীয়। ঠান্ডা মৌসুমে এসব পানীয় যেমন শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে, তেমনি যত্ন নেয় ত্বকেরও। এই পানীয় ত্বকের জেল্লা বাড়িয়ে শরীরে বাড়তি পুষ্টি জোগায়। যদি ঠান্ডা আবহাওয়ায় হঠাৎ সর্দি-কাশি কিংবা ব্রণ বা একনির সমস্যায় ভোগেন, তবে এসব পানীয় অবশ্যই ডায়েটে আজকে থেকেই রাখতে শুরু করুন।

অনেকেই শীতে ত্বকের যত্ন নিতে শুরু করেছেন। তবে বাজারে থেকে কেনা প্রসাধনী তো রয়েছে সেই সঙ্গে ভরসা করতে পারেন কয়েকটি পানীয়র ওপর। প্রতিদিন সেগুলো খেতে হবে এমন নয়। সপ্তাহে দুই এক দিন খেলেই উপকার পাবেন। স্বাস্থ্যকর এই পানীয়গুলো ভেতর থেকে ত্বকের যত্ন নেয়।  

আপেলের জুস: বলিরেখা কমিয়ে ত্বকের বয়স কমাতে ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে নিয়মিত অপেলার জুস খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। এই ফলটির ভিতরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও নানাবিধ উপকারি উপাদান, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরকে চাঙ্গা রাখতেও সাহায্য করে।

লেবু ও মধুর রস: ওজন কমাতে লেবু, মধুর মিশ্রণের জুড়ি মেলা ভার। মেদ কমাতে অনেকে তা খেয়েও থাকেন। কিন্তু এই মিশ্রণটি ত্বকের জেল্লা বাড়াতেও দারুণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে শীতকালে। শরীরের জমে থাকা টক্সিন দূর করতে এই পানীয় উপকারী। লেবু অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ত্বকের যাবতীয় সংক্রমণ দূর করে। শীতে রুক্ষতার আস্তরণ সরিয়ে কোমলতা আনতে এই পানীয়টি খেতে পারেন।

কমলালেবুর জুস: এই ফলটিতে উপস্থিত সাইট্রিক অ্যাসিড শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ত্বকের ভিতরে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক ফর্সা হয়ে উঠতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে নানাবিধ ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে।

পানি: নিষ্প্রাণ ত্বকের সজীবতা ফিরিয়ে আনার অন্যতম সহায়ক পানি। বয়সের ছাপ ও বলিরেখা কমাতেও পানির ব্যবহার বিকল্পহীন। ত্বকের সবচেয়ে পরিচিত সমস্যা হল অতিরিক্ত তৈলাক্ত কিংবা অত্যাধিক শুষ্ক হয়ে যাওয়া। বার বার পানি পান করলে এবং পানি দিয়ে মুখ ধুলে সেই সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। পানি ত্বকের কোলাজেন ধরে রাখতে সাহায্য করে। কারণ কোলাজেনের প্রধান অংশ গঠিত হয় পানি দিয়ে। প্রচুর পরিমাণে পান করলে ত্বক ঝুলে যাওয়া সমস্যা থেকে নিস্তার মিলবে।

গাজরের জুস: ভিটামিন এ এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ গাজর ত্বকের উজ্জ্বলতা ভিতর থেকে বৃদ্ধি করে থাকে। এটি সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট (ইউভি) রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক মেরামত করে থাকে।

গ্রিন টি: ওজন কমানো থেকে শুরু করে ডায়াবিটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা— গ্রিন টি-র জুড়ি মেলা ভার। ত্বকের যত্নেও এর অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে। গ্রিন টি-তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ত্বকের প্রতিটি কোষ সজীব রাখে। ফলে বাইরে থেকেও ত্বকে ফুটে উঠে জেল্লা। শীতেও ত্বকে বসন্তের ছোঁয়া পেতে চাইলে খেতেই পারেন গ্রিন টি।

আরও পড়ুন: শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর করার উপায়

পেঁপের জুস: পেঁপের জুস ত্বককে সুন্দর করতে এবং কালো দাগ দূর করতে বেশ কার্যকরী। প্রতিদিনের নাস্তায় এক গ্লাস পেঁপের জুস রাখলে মন্দ হয় না।

আনারসের জুস: আনারসে রয়েছে ব্রমেলিন নামে একটি উপাদান, যা ব্রণর প্রকোপ কমানোর পাশপাশি নানাবিধ ত্বকের রোগের প্রকোপ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই উপাদানটি ত্বকের মধ্যে লুকিয়ে থাকা নানা ক্ষতিকর উপাদানকে বার করে দেয়। ফলে কোনও ধরনের ত্বকের রোগই আক্রমণ করার সুযোগ পায় না।

আঙ্গুরের জুস: উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ আঙ্গুরের রস ব্রণ এবং ত্বকে বলিরেখা দূর করে দেয়। প্রাচীনকাল থেকে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে আঙ্গুর রস বেশ কার্যকর।

টমেটোর জুস: টমেটোর জুসে থাকে ক্লোরিন ও সালফার। যা আপনার শরীর থেকে টক্সিন দূর করে ডিটক্স করতে সাহায্য করে। দাগমুক্ত ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে চাইলে রোজ একগ্লাস করে টমেটোর জুস খাওয়া অবশ্যই উচিৎ। টমেটোর জুস চামড়ার ট্যান দূর করে, ত্বকের কালো ছোপ দূর করে। সেইসঙ্গে অ্যাকনে ও ব্রণ নিরাময় করে।

শসার জুস: হজমের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে শসা দারুণ কাজ করে। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখে ত্বকেরও। শীতে ত্বকের পরিচর্যায় বাড়তি জৌলুস পেতে ভরসা রাখতে পারেন শসার উপর। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ত্বকের যাবতীয় টক্সিন বার করে দেয়। শরীর আর্দ্র রাখার পাশাপাশি ব্রণর সমস্যা কমাতেও শসা দারুণ কাজ করে।

আমলকির জুস: আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে। এটি চুলের উপকার করার পাশাপাশি ত্বকের জন্যও খুবই ভালো। ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে আমলকির বেশ সুনাম রয়েছে। এটি ত্বকের ক্ষত চিহ্নের দাগ মুছে দেয়।


সর্বশেষ সংবাদ