আমরা চাইলেও আন্দোলনকারীদের প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ দিতে পারি না
- শিহাব উদ্দিন
- প্রকাশ: ১১ মে ২০২৩, ০৭:৪৭ PM , আপডেট: ১১ মে ২০২৩, ০৮:২৮ PM
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক ড. ওমর ফারুক বলেছেন, স্টেপ প্রকল্পের পদগুলো প্রথম শ্রেণির। আমরা তাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আন্তরিক। তবে প্রথম শ্রেণির পদ হওয়ায় আমরা চাইলেও তাদের নিয়োগ দিতে পারি না।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুর নিজ কার্যালয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. ওমর ফারুক বলেন, যারা আন্দোলন করছেন, তাদের বিষয়ে আমরা সকলেই আন্তরিক। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পদ রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে কিছু বাধা রয়েছে। এ কারণে আমরা চাইলেও তাদের নিয়োগ দিতে পারছি না।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাধা সম্পর্কে তিনি বলেন, স্টেপ প্রকল্পে নিয়োগ হওয়া সবগুলো পদই প্রথম শ্রেণির। প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ হয় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে। উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি দিতে হয়। এরপর সবাই আবেদন করেন। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। তবে আন্দোলনকারীদের নিয়োগ দিতে হবে সরাসরি। যা আইনের সাথে সাংঘর্ষিক।
যারা আন্দোলন করছেন তাদের বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার মতো বয়স নেই জানিয়ে ড. ওমর ফারুক বলেন, বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগের সর্বোচ্চ একটি বয়সসীমা রয়েছে। বয়স অতিক্রম করলে কেউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন না। আন্দোলনকারীদের কারো চাকরির বয়স নেই। কাজেই তাদের নিয়োগ রাজস্ব খাতে নেওয়া অনেক জটিল। এই জটিলতা কীভাবে কাটবে সেটি বলা মুশকিল।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্প শেষ মানে চাকরি শেষ, স্টেপ প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৯ সালে শেষ হয়েছে। তাদের চাকরিও তখন শেষ হয়েছে। এছাড়া এই নিয়োগ নিয়ে একটি মামলাও চলমান রয়েছে। এসব কারণে আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি পূরণ হওয়া কঠিন বলেই মনে হচ্ছে।
জানা গেছে, সরকারি ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর মানোন্নয়ন ও শিক্ষকস্বল্পতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ২০১০ সালের জুলাই মাসে সরকার স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহান্সমেন্ট (স্টেপ) শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। দুই ধাপে প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চলমান ছিল। তারপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে পত্রের মাধ্যমে প্রকল্পের জনবল নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর পরিপত্র জারি হয়।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ ৭৭৭ জন শিক্ষক বর্তমানে সরকারি ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত রয়েছেন। যাদের সরকারি চাকরির বয়স ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত বেতন পেয়েছেন। তবে এরপর থেকে তাদের বেতন বন্ধ রয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে স্টেপ প্রকল্পে নিয়োগ পাওয়া ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৭৭৭ জন শিক্ষক ৩৪ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে টানা ১১ দিন ধরে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।