একে একে ৪টি পার, পঞ্চম বিসিএসে ম্যাজিস্ট্রেট শামীম

শামীম হোসেন
শামীম হোসেন  © টিডিসি ফটো

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের প্রথম ব্যাচের ছাত্র শামীম হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষ থেকে শুরু করেছেন বিসিএসের প্রস্তুতি। একে একে চারটা বিসিএস দেয়ার পর পঞ্চম বিসিএসে ধরা দেয় সফলতা। ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন শামীম।

শামীম হোসেনের বিসিএস ক্যাডার হয়ে উঠার গল্প শুনাতে গিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ২য় বর্ষ থেকে শুরু করেছিলাম বিসিএসের প্রস্তুতি। তাই সরকারি চাকরি পেতে খুব বেশি দেরি করতে হয় নি। ৩টি সরকারি চাকরি শেষে অবশেষে ধরা দিল কাঙ্ক্ষিত প্রশাসন ক্যাডার।

২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস যোগদান করেন শামীম। এরপর ৩৫ তম বিসিএসে নন ক্যাডার সহকারী শিক্ষক হিসেবে নওগাঁ সাপাহার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেন। ৩৬তম বিসিএসে এ লিখিত পরীক্ষায় ভালো করেও ফেল করে। ৩৭ম তে লিখিত পরীক্ষায় ৫৫৯ পেয়েও নন ক্যাডার আসায় খানিকটা হতাশ হলেও হাল ছেড়ে দেননি ।

৩৭ বিসিএস থেকে সহকারী পরিচালক হিসেবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করে অদ্যবধি সেখানে কর্মরত আছে। এরপর ৩৮তম বিসিএসে আবার প্রিলিতেই ফেল করে ।

আরও পড়ুন: ফ্রিতে হলেও টিউশন পড়ানো উচিত

৪০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সহকারী কমিশনার হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়ে বলেন, আল্লাহর দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া । ৪১তম বিসিএসে প্রিলিতে ফেল করায় এটাই ছিল শেষ সুযোগ। আসলে আল্লাহ্ পরিশ্রমকে বৃথা যেতে দেন না । বিসিএস হলো একটি অধ্যবসায়ের নাম। আল্লাহ্ সেই অধ্যবসায়ে পাশ করিয়েছেন ।

স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমার বাবার স্বপ্ন ছিল তার ছেলে ম্যাজিস্ট্রেট হবে। আমি এজন্যই বেশি খুশি যে আমি আমার বাবা মার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। আব্বা রেজাল্টের কথা শুনে কেঁদে ফেলেছেন। এরকম কান্না সকল বাবা - মা ই কাদতেঁ চান। আমার বাবা এই রেজাল্টের জন্য এত দোয়া করেছেন যেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমি শুধু বলতাম আল্লাহ্ ভাগ্যে লিখলে হবে। কিন্তু ভয় হতো যদি এবার মিস হয় আব্বাকে কি বলে সান্তনা দেব। আল্লাহ্ আমাকে নিরাশ করেননি। আগামীতেও যেন তাদের খেদমত করতে পারি সেই দোয়া করি। সেই সাথে আমার এই পথ চলায় যাদের অনুপ্রেরণা বিশেষ করে আমার প্রাইমারি, হাই স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। বড় ভাই মুনজুর ভাইয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা নিয়েছি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা।

নিজের স্বপ্ন পূরণ হলেও বন্ধুদের স্বপ্ন সত্যি না হওয়াতে কিছুটা আক্ষেপ রয়েই গেলো। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম যদি আমার বন্ধু হোসাইন, সরোয়ার আমার সাথে সুপারিশ প্রাপ্ত হতো। হোসাইন আর আমি এক সাথে প্রস্তুতি নিয়েছি। আমার আত্মীয় স্বজন, শ্বশুর , শাশুড়ি, অর্ধাঙ্গিনী, সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী, প্রিয়জন, বন্ধু, গ্রামবাসী সহ যারা আমার জন্য সব সময় দোয়া করতেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও দোয়া রইলো। আমি যেন সততার সাথে আমার দায়িত্ব পালন করতে পারি সেই দোয়া চাই। আল্লাহ্ যেন আমাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা দান করেন।


সর্বশেষ সংবাদ