উত্তরাধিকারহীন ছাত্রলীগে হালের নেতারাও ভালো নেই
- ফরহাদ কাদের
- প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৩২ AM
আজ ৪ জানুয়ারি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৪৮ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ছাত্রলীগ। মূলত বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যেই মূল দল আওয়ামী লীগের জন্মের আগে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল গৌরব ও ঐতিহ্যের এ ছাত্র সংগঠনটি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন।
ইতিহাস বলছে, তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবের নেতৃত্বগুণে একঝাঁক মেধাবী তরুণের উদ্যোগে যাত্রা শুরু হয়েছিল ছাত্রলীগের। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’। পাকিস্তান আমলে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেয়া হয়। স্বাধীনতার পরপরই এর নাম হয় ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক ছিলেন নাঈমুদ্দিন আহমেদ। পরে সভাপতি হন দবিরুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খালেক নেওয়াজ খান। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফাসহ প্রগতিশীল সব সংগ্রামের অগ্রভাগে ছিল ছাত্রলীগ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৯৭৮ থেকে ৮১’ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ওবায়দুল কাদের, যিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এখন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ছাত্রলীগের সভাপতি ও গোলাম রাব্বানী সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বরত আছেন, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির নেতৃত্বে আসেন তারা।
‘অনেকে অর্থবিত্তের দিকে গেছেন, অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে ছা-পোষা জীবন যাপন করছেন, হয়তো অনেকেই রাজনীতিতে আছেন, বড় দলেই আছেন, কিন্তু নেতা হিসেবে তাঁরা পূর্ণ প্রস্ফুটিত হয়েছেন-এমন কথা বলা যাবে না’
কিন্তু সাবেক নেতারা কে কীভাবে আছেন? তাদের কতটা সংশ্লিষ্টতা আছে আওয়ামী লীগ কিংবা অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গ্রুপিং, লবিং, অভ্যন্তরীণ কোটা, আর্থিক দৈন্যতার কারণে সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনেক নেতাই আওয়ামী লীগের মূল স্রােতের সাথে তাল মিলিয়ে এগোতে পারছেন না। নিজের আদর্শ এবং নীতি ধরে এখনো দলকে আঁকড়ে ধরে রাজনীতি করে গেলেও মূল সংগঠন আওয়ামী লীগে তারা গুরুত্ব পাচ্ছেন না। এ নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের ক্ষোভ আছে, দুঃখ আছে। তাদের অনেক পরে এসে অনেকেই এমপি-মন্ত্রী হয়ে গেছেন। অনেকেই প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিকভাবে সরকারের নানা নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করছেন। তাই সংসদ নির্বাচন করার বিষয়টি তারা চিন্তায়ও আনতে পারছেন না।
সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন লিখেছেন, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের প্রশ্নে ছাত্রলীগের বিভক্তির ফলে দলের অনেক মেধাবী নেতাকর্মী নতুন অংশে যুক্ত হয়ে যান। এভাবে স্বাধীনতার পর থেকেই মূল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং তার প্রভাবে অন্যান্য পর্যায়েও মেধাবী আদর্শবাদী দক্ষ রাজনৈতিক কর্মীর ঘাটতি শুরু হয়। পরবর্তীকালে এই ঘাটতি সব দলে কমবেশি ছড়িয়ে পড়েছে। সে কারণে আজ জাতীয় রাজনীতির দিকে তাকালে দেখা যায়, এখনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য হওয়ার মতো নেতা-সংগঠকেরা সবাই ষাটের দশকের ছাত্ররাজনীতি থেকেই উঠে এসেছেন।
সরকারের দিকে তাকালেও দেখব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের পর্যন্ত যাঁরা রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করছেন, সবাই ষাটের দশকের আন্দোলনের সৃষ্টি-যদিও জনাব কাদের স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হয়েছিলেন। অন্যান্য দল থেকে এ রকম রাজনৈতিক ব্যক্তি যাঁরা আওয়ামী লীগে এসেছেন এবং বর্তমানে চৌদ্দ দলের শরিক হিসেবে সরকারে যোগ দিয়েছেন, তাঁরাও ষাটের দশকের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল।
তিনি বলছেন, অনেকে অর্থবিত্তের দিকে গেছেন, অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে ছা-পোষা জীবন যাপন করছেন, হয়তো অনেকেই রাজনীতিতে আছেন, বড় দলেই আছেন, কিন্তু নেতা হিসেবে তাঁরা পূর্ণ প্রস্ফুটিত হয়েছেন-এমন কথা বলা যাবে না। সত্য হলো, ছাত্ররাজনীতির আজ দুর্দশা চলছে। এ কেবল আদর্শের ঘাটতি নয়, মুক্তিযুদ্ধের পরে তারুণ্যকে দেশ গড়ার গঠনমূলক কাজে লাগানোর যথাযথ পরিকল্পনা আমাদের নেতৃত্বের ছিল না। যুদ্ধফেরত তরুণদের রণাঙ্গনের, দেশান্তরের, শরণার্থী জীবনের যে ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা ঘটেছিল, তা তাঁদের মধ্যে একধরনের অস্থিরতার জন্ম দিয়েছিল।
স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠনটির সাবেক নেতাদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭১ সাল থেকে বর্তমান কমিটি পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে এসেছেন প্রায় ৩ ডজন নেতা। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ছিলেন ১জন। সাবেক এই ছাত্র নেতাদের মধ্যে বর্তমানে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী ফোরামে কেউ নেই; অবশ্য স্বাধীনতা পূর্ববর্তী নেতা তোফায়েল আহমেদ বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। অনেকে বিএনপিতে গেছেন, রয়েছেন অন্য দলেও। অনেকে বেঁচে নেই। কেউবা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী। স্বাধীনতার পর নানা মান অভিমান নিয়ে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। নূরে আলম সিদ্দিকী বর্তমানে রাজনীতির মূল স্রোতের বাইরে গিয়ে প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
নূরে আলম সিদ্দিকীর সময়ে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শাজাহান সিরাজ। দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র ৬ মাসের মাথায় ছাত্রলীগে ভাঙন দেখা দেয়। ‘মুজিববাদী’ হিসেবে পরচিতি অংশ নিয়ে থেকে যান নূরে আলম সিদ্দিকী। আর শাজাহান সিরাজের অংশটি ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রী’পন্থী হিসেবে পরিচিত হয়। এই অংশটি পরবর্তী সময়ে জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগ নামে আত্মপ্রকাশ করে। শাজাহান সিরাজ জাসদের টিকিটে ৩ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর যোগ দেন বিএনপিতে। ৮ম সংসদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে দল ও রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় আছেন।
১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের সভাপতির পদে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ শহীদুল ইসলাম। পরে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে এরশাদ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ও গণপূর্তমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। আর বর্তমানে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির মহাসচিবের পদে আছেন। শেখ শহীদুল ইসলামের সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম এ রশিদ। বর্তমানে তিনি প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে জড়িত।
১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন মনিরুল হক চৌধুরী। পরবর্তীতে তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মনিরুল হক চৌধুরীর সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শফিউল আলম প্রধান। হত্যা মামলা মাথায় নিয়ে তিনি পদ ও দল থেকে বহিষ্কৃত হন। বিএনপি জোটের অন্তর্ভুক্ত জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সভাপতি থাকা অবস্থায় মারা যান তিনি।
ভালো নেই ৮০ পরবর্তী অনেক নেতাও
১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির পদে দায়িত্বে ছিলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়ে বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন। ওবায়দুল কাদেরের সময় বাহালুল মজনুন চুন্নু সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে নেই। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট নির্বাচনে আওয়ামী প্যানেলের নির্বাচনী দেখভালের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু সমাজ কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন।
১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের সভাপতি হন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। এমবিবিএস সম্পন্ন করা মোস্তফা জামাল চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ নিয়েই বর্তমানে ব্যস্ত থাকেন। ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সময়ে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত সভাপতি ছিলেন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল মান্নান। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ায় সারিয়াকান্দি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া এই ছাত্রনেতা বর্তমানে একজন কৃষিবিদ হিসেবে পরিচিত। মান্নানের মেয়াদকালে সাধারণ সম্পাদকের পদে ছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। নবম সংসদে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও দশম সংসদে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি। মনোনয়ন পাননি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।
১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। মুক্তিযুদ্ধের পর ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে তিনিই প্রথম ভিপি নির্বাচিত হন। এর আগে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ধানের শীষে সংসদ সদস্য হয়েছেন। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের সময়ে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা আব্দুর রহমান নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থাকলেও ব্যক্তিগত জীবন ও ব্যবসা নিয়ে বেশি ব্যস্ত রয়েছেন।
১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন হাবিবুর রহমান হাবিব। পরে ছাত্রলীগের রাজনীতি ছেড়ে যোগ দেন বিএনপিতে। এ সময় সাধারণ সম্পাদক থাকা অসীম কুমার উকিল বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক।
১৯৯২ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বে থাকা মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী বর্তমানে অনেকটাই নিরব রয়েছেন। নেই কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদেও। তার সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ইকবালুর রহীম। দশম সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর সদর থেকে সংসদ সদস্য হয়ে বর্তমান সংসদের একজন হুইপ। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি এই ছাত্রনেতা বর্তমানে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। শামীমের সভাপতি থাকাকালীন সাধারণ সম্পাদকের পদে ছিলেন ইসহাক আলী পান্না। একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যানের পদে রয়েছেন তিনি।
১৯৯৮ থেকে ২০০২ পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির পদে ছিলেন বাহাদুর বেপারি। তিনি পাওয়ার প্ল্যান্ট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এছাড়া একজন টকশো ব্যক্তিত্ব হিসেবে রয়েছে তার পরিচিতি। বাহাদুর বেপারির সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অজয় কর খোকন। দশম সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি তিনি। পরে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে দাঁড়ালে নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেয়।
২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির পদে ছিলেন লিয়াকত শিকদার। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একজন ব্যবসায়ী। লিয়াকত শিকদারের সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নজরুল ইসলাম বাবু। নবম ও দশম সংসদের নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। রাজনীতি ছাড়াও জড়িত আছেন ব্যবসায়। ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন মাহমুদ হাসান রিপন। একই সময়ে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন। তারা দু’জনই আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন।
২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ। সোহাগের সভাপতি থাকাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সিদ্দিকী নাজমুল আলম। বদিউজ্জামান সোহাগ রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও এখনো আওয়ামী লীগের দায়িত্বে আসতে পারেননি। সিদ্দিকী নাজমুল আলম দীর্ঘদিন লন্ডনে। সেখানে তিনি চাকরির পাশাপাশি পড়াশুনা করছেন বলে জানা যায়। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেন সাইফুর রহমান সোহাগ ও জাকির হোসেন।