চাঁদা দাবির অডিও ফাঁসের পর ছাত্রদল নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার

জামালপুরের মাদারগঞ্জে উপজেলা এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি করার অভিযোগে নাজমুল ইসলাম খান নামের ছাত্রদলের এক নেতাকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের ভিত্তিতে জামালপুর জেলা শাখার অধীনস্থ মাদারগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল ইসলাম খানকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার (নাজমুল) সঙ্গে কোনো ধরনের সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলো।
নাজমুল ইসলাম খানের কণ্ঠসদৃশ কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ৫ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের অডিওতে ইউনিয়ন যুবলীগের রাজনীতিতে জড়িত উপজেলা শহরের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তাকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতে শোনা যায়। গতকাল বুধবার সকালে অডিওটি ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ব্যবসায়ীর নাম মো. মনোহর। তিনি উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সদস্য এবং উপজেলা শহরের মুঠোফোন ব্যবসায়ী। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে।
ছড়িয়ে পড়া অডিওতে ছাত্রদল নেতার কণ্ঠসদৃশ ব্যক্তিকে ব্যবসায়ীর উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, তুমি যদি মেল হও, তাহলে তুমি মদ্দা মানুষের মতো বুক ফুলিয়ে চলবা। যেদিকে মন চায়, সেই দিকে যাবা। তুমাক নিয়ে থানাত যামু, এসপি অফিস যামু, ডিবি অফিস যামু। ব্যাক (সব) মিলতাল করমু। তুমি সম্ভবত আমাক চিনো না। হয়তো আমার সম্পর্কে আইডিয়া নাই। মাদারগঞ্জের আন্ডারগ্রাউন্ডটা আমিই নিয়ন্ত্রণ করি।
এ সময় ব্যবসায়ী ওই নেতার নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাম? সাক্ষাতে কথা হবে। আর দুই (দুই লাখ টাকা) কাল সকালবেলায় দিয়ে দিবা। শুনো, এখানে কোনো কথা হবে না, কোনো প্যাঁচাল হবে না, সাক্ষাতে এসে ডাইরেক্ট দিয়ে দিবা। তুমি তোমার সুবিধামতো জায়গায় থাকবা, আমাক ফোন দিবা। আমি যামু, সাক্ষাতে চা খামু, কথা কমু।
নাজমুলের বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদারগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান বলেন, সেই চিঠি ফেসবুকের মাধ্যমে আমিও দেখেছি। কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। দলের যে কারও কেন্দ্রীয় ও জেলা ছাত্রদলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।