এসএসসির দুই পরীক্ষা পেছানোর দাবি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ PM , আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ PM
আগামী বছরের এসএসসি’র দুটি পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) ছাত্র সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।
পিসিপি কেন্দ্রীয় সভাপতি অঙ্কন চাকমা ও সাধারণ সস্পাদক অমল ত্রিপুরার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও শিক্ষা উপদেষ্টার প্রতি এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে পিসিপি নেতারা ‘বৈসাবি’ (বৈসু-সাংগ্রাই-বিঝু-বিহু-সাংক্রান-বিষু) উৎসবের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘প্রত্যেক বছর ১২ এপ্রিল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের এই ঐতিহ্যবাহী প্রধান সমাজিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই দিনসমূহে পাহাড়ের শিক্ষার্থীরাসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশাজীবী মানুষ জাতিসত্তার ঐতিহ্যকে ধারণ করে, নিজ নিজ সংস্কৃতি চর্চা করে থাকে এবং আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে। যার মাধ্যমে পাহাড়ে সকল জাতির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মিলন ঘটে। আগামী উৎসব ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ১২ এপ্রিল শুরু হবে। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষা রুটিনে দেখলাম ১৩ এপ্রিল এবং ১৫ এপ্রিল যথাক্রমে বাংলা দ্বিতীয়পত্র আর ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা রাখা হয়েছে। এর মাঝে ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ। মূলত এই দিনগুলোতেই পাহাড়ি সম্প্রদায়গুলো উৎসবটি পালন করে থাকে। ফলে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা সামনে রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা আনন্দঘন পরিবেশে তাদের নিজ নিজ উৎসব পালন করার সুযোগ পাবেন না। সুতরাং এই রুটিন অবশ্যই পরিবর্তন করা প্রয়োজন।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ‘বৈসাবি’ উৎসবকে বিবেচনায় রাখা উচিত ছিল মন্তব্য করে তারা বিবৃতিতে আরো বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা এসএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রণয়নের সময় এদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসবের বিষয়টা বিবেচনায় নেয়নি। এ সময়টায় পাহাড়ের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, মুরুং, খুমি, চাক, খিয়াং, লুসাই, পাংখো, বম, তঞ্চঙ্গ্যা, সাঁওতাল, গুর্খা, অহোমী ও রাখাইনসহ ১০ ভাষা-ভাষী ১৫টি জাতিসত্তার মানুষ নববর্ষকে নিজ নিজ স্বকীয় আচারে বরণ করে নেয়। তাদের উৎসব বৈসু-সাংগ্রাই-বিঝু-বিহু-সাংক্রান-বিষু যে নামেই পরিচিত করি না কেন, এগুলো পাহাড়িদের শত শত বছরের ঐতিহ্য। যা এই দেশের সংস্কৃতিকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।
‘বৈসাবি’ উৎসবকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দেশের নানা ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরতে পাহাড়ে জাতিসত্তাসমূহের ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবকে সরকারি সাধারণ ছুটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। যার মাধ্যমে দেশের অন্যান্য জাতি, ধর্ম, বর্ণ মানুষের সঙ্গে পাহাড়ে মানুষের সাংস্কৃতিক ঐক্য ও সম্মিলন ঘটবে বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশ সরকারের ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ছুটির তালিকায় ‘বৈসাবি’ উৎসব উপলক্ষে দুই দিন ঐচ্ছিক ছুটি রাখা হয়েছে। এই দুই দিনের ছুটিতে সমতলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত পাহাড়িদের নিজ বাড়িতে গিয়ে উৎসব পালন করে ফিরে আসা সম্ভব নয়। ফলে এই ছুটি সাধারণ ছুটির সঙ্গে যুক্ত করে আরো বাড়াতে হবে।
বিবৃতিতে ‘বৈসাবি’ উৎসবকে সাধারণ ছুটি ঘোষণাসহ ৫ দিনের সরকারি ছুটি নিশ্চিত করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে জোর দাবিও জানিয়েছে পিসিপি নেতারা।