কোটার কারণে ১০০ তে ৮৬ নম্বর পেয়েও প্রথম হওয়া প্রার্থী চাকরি পায়নি- সাবেক অতিরিক্ত সচিব

  © সংগৃহীত

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনের পক্ষে-বিপক্ষে অনেকে মতামত জানাচ্ছেন। কোটা নিয়ে এবার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন। তিনি ফেসবুকে জানিয়েছেন, কোটার কারণে মেধা দিয়ে প্রথম হওয়া প্রার্থীকেও চাকরি দেওয়া সম্ভব হয়নি।  

বুধবার (৩ জুলাই) রাতে  তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্ট থেকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। 

তিনি লেখেন, ‘কোটার কারণে ১০০ নম্বরে ৮৬ পেয়ে মেধা তালিকায় প্রথম হওয়া প্রার্থীকে চাকুরি দেয়া সম্ভব হয়নি। এখন এর পক্ষে বিপক্ষে বলবেন আপনারা।’

সে ফেসবুক পোস্টের নিচে মির হোসাইন চৌধুরী আইডি দিয়ে একজন মন্তব্য করেন, ‘যিনি প্রথম হয়েছে উনাকে চাকরি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তার মানে কোটা ব্যতিত চাকরি হবে না। তাহলে বলে দিলেই হত কোটা ছাড়া আবেদন করার দরকার নাই’ 
 
খোরশেদ আলম নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘কোটায় দেশকে মেধাশুন্য করছে। আবেগ এর ঠেলা চলছে সবখানে’

সাদিক উল্লাহ নামে একজন বলেন, ‘কিছু বলার নেই স্যার। অভিশপ্ত সিস্টেম। এজন্যই সামর্থ্যবান মেধাবীরা দেশ ছাড়ছে দ্রুত। কোটা নিপাত যাক, মেধার জয় হোক’

রবিউল ইসলাম নামে একজন লেখেন, ‘স্যার, কোটা বাতিল করে দিয়ে আবার ফিরে আনা হলো; এই ভণ্ডামির মতলবটা কী সেটা আগে অনুধাবন করা দরকার।’

ফেসবুকে পরিচিত মাহবুব কবীর মিলন অবসরে যাওয়ার আগে সর্বশেষ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। রেলওয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।  

এরআগে, মাহবুব কবীর মিলন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য এবং কিছু সময়ের জন্য সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ছিলেন। তাকে ২০২০ সালের ৬ আগস্ট তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।

আজ বুধবার (৩ জুলাই) কোটা বাতিলের দাবিতে এবং পূর্বের কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে প্রায় দুই ঘণ্টা রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে কোটা বিরোধী বিক্ষোভকারীরা। ২ ঘন্টা পর শাহবাগ মোড় ছেড়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১১টা থেকে হাইকোর্টের শুনানির আগ পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়ে তারা শাহবাগ ছেড়েছে।

শাহবাগ ছাড়ার আগে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনের নেতৃত্ব স্থানে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ও আরেক শিক্ষার্থী সারজিস।

এসময় তারা জানান, আগামীকাল সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হবেন তারা। পরবর্তীতে তারা হাইকোর্টের শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আজকের মতই শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।

জানা গেছে, এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা কলেজ ও অন্যান্য কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। প্রায় দুই ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করে আন্দোলনের পক্ষে নানা স্লোগান দেন তারা। 

এর আগে  দুপুর দেড়টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ব্যানারে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন হলের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিশাল এক মিছিল নিয়ে যাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় শ্যাডো পার হয়ে হল পাড়া হয়ে মুহসীন হলের গেইট দিয়ে বের হয়ে টিএসসিতে আসেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বেলা ৩টার পর হাইকোর্ট হয়ে শাহবাগ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে তীব্র আন্দোলনের মুখে পড়ে কোটা বাতিল করে সরকার। পরবর্তীতে এবছর জুন মাসে হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করে রায় দিলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। সরকারের আপিলে কোটা নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) আবার রায় দিবেন আপিল বিভাগ।


সর্বশেষ সংবাদ