‘সব ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান ছাড়া ছাত্ররাজনীতির করুণ পরিস্থিতি উত্তরণ অসম্ভব’

নাহিদুজ্জামান শিপন
নাহিদুজ্জামান শিপন  © ফাইল ছবি

বর্তমানে দেশের সব ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের একক আধিপত্য বিরাজ করছে। এতে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছে। ফলে কোণঠাসা হয়ে উঠেছে অন্য ছাত্রসংগঠন। এ কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ ছাত্ররাজনীতি বিমুখ হয়েছে। 

এ অবস্থায় ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ধারার ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনতে সব ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন নাহিদুজ্জামান শিপন। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে সব ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান ছাড়া ছাত্ররাজনীতির করুণ পরিস্থিতি উত্তরণ অসম্ভব।

নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে কলুষিত ছাত্ররাজনীতির দায়ভার অন্য কোন ছাত্র সংগঠন নেবে না। এই প্রজন্মের কাছে ছাত্রলীগের দুঃখিত হওয়া উচিত যে বিগত দেড় দশকে তারা জাতি গঠনে ছাত্রসংগঠনের ভূমিকা পালন না করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভয় ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। যার ফলে বুয়েটসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ ছাত্ররাজনীতি বিমুখ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে ছাত্র রাজনীতির সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকল ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত হবার পর অনতিবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংগঠনের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতকরণ ব্যতীত ছাত্ররাজনীতির এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ অসম্ভব।

ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ছাত্রলীগ যদি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের এই ভয় ও ত্রাসের রাজনীতি থেকে সরে না আসে তাহলে বুয়েটের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছুদিনের মধ্যে 'বয়কট ছাত্রলীগ' আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের আন্দোলনে নামতে পারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

তিনি বলেন, আমার মনে করি, যেহেতু বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রের বাইরের কোন প্রতিষ্ঠান নয় সুতরাং সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রের জনগণকে যেভাবে তাদের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে একইভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগের ত্রাসের একক রাজনীতি কায়েমের মধ্যে দিয়ে দেশে নেতৃত্ব শূন্যতা তৈরি করে মেরুদণ্ডহীন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বর্তমানে বিনাভোটে জবরদস্তিমূলকভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগের হাতে আজ আদিম যুগের মতো চাপাতি, রামদা, রড-লাঠিসহ আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিয়েছে।

“আমরা মনে করি, ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই রাষ্ট্রটির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখতে আজ রাষ্ট্রের সামগ্রিক সংস্কার প্রয়োজন এবং এই সংস্কারের কাজে অতীতের মতো এদেশের ছাত্র সমাজই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সুতরাং অনতিবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকল ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের প্রকৃত সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।”


সর্বশেষ সংবাদ