ইনানকে সালাম দেওয়া নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মারামারি

একজন গুরুতর আহত
একজন গুরুতর আহত  © টিডিসি ফটো

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে সালাম দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজন গুরুতরসহ তিনজন আহত হন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে দুই দফায় এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা যায়, লাঠি, স্টাম্প, হকিস্টিক ও গাছের ডাল দিয়ে কামরুলের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয় বলে উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান।

এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ঢাবির সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন ঢাবির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী সাইদুর রহমান শান্ত এবং তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের এককর্মী। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন পর শেখ ইনান মধুর ক্যান্টিনে আসলে তাকে সালাম দেওয়া নিয়ে সূর্যসেন হল ও বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে একাত্তর হলের নেতাকর্মীরা সেখান থেকে বের হয়ে স্টাম্প, হকিস্টিক নিয়ে প্রস্তুত থাকে। মধুর ক্যান্টিন থেকে বের হলেই একাত্তর হল ছাত্রলীগের ছাত্রবৃত্তি উপসম্পাদক আবদুল্লাহ আল মারুফ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপসম্পাদক ফিরোজ আলম অপি, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপসম্পাদক মাশফিউর রহমান, কর্মী ফজলে নাভিদ অনন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিঝুম ইফতেখারসহ বেশ কয়েকজন হামলায় ঝাঁপিয়ে পড়েন। পরে কেন্দ্রীয় কয়েকজন সিনিয়র নেতার হস্তক্ষেপে হামলা বন্ধ হলে গুরুতর আহত কামরুলকে মেডিকেলে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের উপ তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক সিফাত আল শাফি বলেন, ইনান ভাই প্রবেশ করলে সালাম দেওয়া নিয়ে একটু ঝামেলা হয়। পরে মধুর ক্যান্টিন থেকে কামরুল বের হলে তার ওপর অতর্কিত হামলা হয়। লাথি দিয়ে ফেলে দিয়ে হকিস্টিক, স্টাম্প, গাছের ডাল দিয়ে হামলা চালানো হয়। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে শান্তও মাথায় আঘাত পায়। কামরুলের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।

সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে শত শত মানুষের সামনে সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক কামরুলের ওপর রড, লাঠি দিয়ে অতর্কিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর বিচার দাবি করছি। কামরুল এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি আছে। মাথায় সেলাই লেগেছে এবং ঠোঁট কেটে গেছে। অবিলম্বে এই হামলার বিচার করতে হবে।

অভিযুক্ত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিঝুম উপস্থিত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি মিরপুর চিড়িয়াখানায় আছেন বলে জানিয়েছেন। তবে ভুক্তভোগীরা তিনি উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এছাড়া বাকি অভিযুক্তদের ফোনে পাওয়া যায়নি।

একাত্তর হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইনানের অনুসারী ও বর্তমান ক্যান্ডিডেট সাদিক হাসান মিয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রথমে আমরা যখন ইনান ভাইকে সালাম দিতে যাই তখন সূর্যসেন হলের কর্মীদের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়। ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে সাধারণত এমন হয়ই কিন্তু ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে তারা আমাদের হলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাসফিউরকে আহত করে। এসময় তিনি মাসফিউরের রক্তাক্ত মুখের ছবি প্রতিনিধিকে দেখান। 

তিনি আরও বলেন, তবুও আমরা আমাদের প্রায় ৯০ জন নেতাকর্মীকে নিয়ন্ত্রণ করে ইনান ভাইয়ের নির্দেশে বাইরে চলে আসি। কিছুক্ষণ পর সূর্যসেন হলের নেতাকর্মীরা বাইরে এসে এই বিষয় নিয়ে হাসি তামাশা করার একপর্যায়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটে যায়। এটা পূর্বপরিকল্পিত কোনো কিছু নয়। আমরা নিজেরাই কামরুলকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি এবং এতক্ষণ সেখানেই ছিলাম। এটা আকস্মিকভাবে হয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সূর্যসেন হলের ইনানের অনুসারী ও ক্যান্ডিডেট শামিমুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কামরুলের মাথায় দেড় ইঞ্চি ক্ষত হয়েছে এবং কাল সিটি স্ক্যান করা হবে। আমরা প্রক্টরকে জানিয়েছি এবং মামলা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে বিজয় একাত্তর হলের মারুফ, ফিরোজ আলম অপি, মাশফিউর রহমান, অনন, নিঝুম ইফতেখারসহ বেশ কয়েকজন। এরা প্রত্যেকেই বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং ইনানের অনুসারী।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে। তবে ইনানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি খাদিমুল বাশার জয় বলেন, আমি নিজেই কামরুলকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি এবং সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি অবগত করেছি। তিনি জানিয়েছেন- যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। এমন ঘটনা দুঃখজনক। অভিযোগ আসলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence