চার দফা দাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশ

গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশ
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশ  © সংগৃহীত

জাতীয় বাজেটের ২৫ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দসহ চার দফা দাবিতে ছাত্র সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ও বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন। 

আজ রবিবার (১৭ই সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শিক্ষা দিবসকে কেন্দ্র করে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ও সরকারের সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

তাদের ৪ দফার মধ্যে রয়েছে  সর্বজনীন, বৈষম্যহীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, গণতান্ত্রিক এবং একই ধারার শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করা। শিক্ষা বিধ্বংসী জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২১ বাতিল করা,জাতীয় বাজেটের ২৫ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ করা। মেট্রোরেলসহ গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাশ দেওয়া,ডাকসু সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু করা। সন্ত্রাস -দখলদারিত্বমুক্ত গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের স্বায়ত্তশাসন হরণ না করা। 

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায় বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে সকল মৌলিক উপাদানকে ধ্বংস করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। সরকার সংবিধানকে বারবার সংশোধন করেছে, বাক স্বাধীনতাকে হরণ করেছে, পুলিশি রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছে এই দেশটাকে। যার ফলে পুলিশ এবং র‍্যাবের মাধ্যমে ২০১৪ সালে বিনা ভোটে নির্বাচন হয়েছে এবং ২০১৮ সালে স্পষ্টভাবে রাতের বেলা  ভোট হয়েছে আর আর এগুলোর চুড়ান্ত রূপ আজকের এই ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র। এসময় তিনি বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষানীতিকে ১৯৬২ সালের আইয়ুব খানের শিক্ষানীতির সাথে তুলনা করে করে বলেন, বর্তমান শিক্ষানীতিতে আইয়ুব খানের শিক্ষানীতির মিল রয়েছে অথচ এই সরকার বলে তারা চলে গেলে নাকি এদেশে পাকিস্তানি প্রেতাত্মা ভর করবে।

সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা বলেন, পাহাড়ে মাধ্যমিক থেকে উচ্চ স্তরে পৌঁছাতে গিয়ে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। আজকে পুরো বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়াও ৪৫ টি জাতি গোষ্ঠীর বসবাস  রয়েছে। তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ভাষা আছে। তাদের নিজস্ব বর্ণমালায় মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের অধিকার তাদের আছে। যার নিশ্চয়তা স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এই সরকার দিতে পারে নি।

এসময় তিনি বলেন, আজ স্কুলে শিক্ষার্থীদেরকে শেখানো হচ্ছে পাহাড়িরা কি খায়। একটা জাতিগোষ্ঠীর পরিচয় তার খাদ্য দিয়ে হতে পারে না। বাঙালিদেরকে পরিচয় করানো হচ্ছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস দিয়ে আর আমাদেরকে পরিচিত করা হচ্ছে আমরা কি খাই সেটা দিয়ে। আজকে প্রাথমিক শিক্ষাকে জেলা পরিষদের হাতে দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে সেই শিক্ষককে যখন পাহাড়ি অঞ্চলে যেতে বলা হয় তখন তারা যান না। এভাবে একটি জাতিগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে রেখে, দেশ মুক্তি পেতে পারে না। কোনো দেশ এগিয়ে যেতে পারে না।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, আপনারা বলছেন শিক্ষা ব্যবস্থাকে আপনারা স্মার্ট করবেন অথচ আপনারা শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ কমাচ্ছেন।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানী, যোগ্য মানুষ নিয়োগ পাচ্ছেনা। যারা বেশি সরকারের চাটুকারিতা করতে পারে তারাই ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছে। 

এসময় তিনি আজকে যে শিক্ষাক্রম তৈরি করা হচ্ছে সেখানে শিক্ষার্থীদের একজন ভালো মানুষ হওয়ার কথা লেখা থাকলেও কিভাবে একজন ভালো মানুষ হওয়া যায় সে-সম্পর্কে কিছু লেখা নাই। এই শিক্ষা ব্যবস্থায় চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সম্পর্কে বলা হয়। এই শিক্ষাক্রম দ্বারা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাজারে পরিণত করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদেরকে শ্রমিকে পরিণত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এছাড়াও গণতান্ত্রিক কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশানের সঞ্চালনায় সমাবেশ আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়সহ আরও বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। 

উল্লেখ্য গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মধ্যে রয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী,বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট,বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ,বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। সমাবেশ শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence