ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, চোখ হারালেন ফারুক

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধিন ওমর ফারুক
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধিন ওমর ফারুক  © সংগৃহীত

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ওমর ফারুকের একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। রোববার (৮ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন আহত ফারুকের মা মেরিনা আক্তার।

জানা যায়, গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. এমাদুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পক্ষের সঙ্গে সহসভাপতি শরিফ হোসেন, সাব্বির মোল্লা; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত ইসলাম; সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসেন, মোশাররফ হোসেন ও আকাশ ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছিলেন।

আহতদের একজন ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক। এরপর কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে রাতেই তাঁকে রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রোববার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে ফারুকের মা মেরিনা আক্তার বলেন, গতকাল শনিবার ওমর ফারুকের চোখের অস্ত্রোপচার হয়েছে। আজ সকালে ব্যান্ডেজ খোলা হয়। এরপর ডান চোখটিতে আর আলো পাচ্ছেন না ওমর ফারুক। ডাক্তার বলেছে, আমার ছেলে একটি চোখে আর দেখতে পারবে না। তার যে একটি অঙ্গ নষ্ট হয়ে গেল, এখন তার কী হবে?

তিনি জানান, ছেলে রাজনীতি করেন কি না, সেটি তিনি জানেন না। নিয়মিত কথা হলেও ছেলের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে কথা হতো না। এখন তিনি ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত, তিনি নিজেও এখন অন্ধকার দেখছেন। ছেলের উন্নত চিকিৎসার পাশাপাশি ভালো ভবিষ্যৎ চান তিনি।

জানা যায়, ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও তেমন সক্রিয় ছিলেন না ফারুক। হলে থাকার জন্য যতটুকু সম্পৃক্ততা প্রয়োজন, ততটুকু রাজনীতি করতেন। তার কোনো পদ-পদবি নেই।

আহত হওয়ার প্রসঙ্গে ওমর ফারুক বলেন, শুক্রবার জুমার পর থেকে ক্যাম্পস উত্তপ্ত ছিল। নামাজ শেষে হলে ফিরে আসার পর ‘বড় ভাইয়েরা’ বলেছিলেন নিচে নামতে। নিচে নামার পর খাওয়াদাওয়া শেষ করেছিলেন তিনি। প্রথমে তিনি মনে করেছিলেন, কোনো মিছিলে যাওয়ার জন্য ডাকা হয়েছে। তবে একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সে সময় ক্যাম্পাস থেকে তিনি নিজে তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠান।

ওমর ফারুক বলেন, বেলা তিনটার কাছাকাছি সময় আবদুস সামাদ হলের নিচতলার কলাপসিবল গেট খোলা ছিল। সে সময় তিনি গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে সবাইকে গেটের ভেতরে যেতে বলছিলেন। তখন ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলছিল। গেটের ভেতরে মাথা ও বাইরে শরীর ছিল। হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে তাকাতেই একটি ইট গিয়ে ডান চোখে আঘাত করে। এরপরই তিনি উল্টে পড়ে যান। এরপর কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন।