‘৩ সংস্থায় ক্লিয়ার, একটিতেই আটকা ভবিষ্যৎ’, তরুণ বললেন— স্বপ্ন এখন সত্যি, তবুও ঈদে বাড়ি যাওয়ার সাহস হলো না
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ০৫:০২ PM , আপডেট: ১০ জুন ২০২৫, ১০:২২ PM

তানজীম হাসান (ছদ্মনাম)। ৪৩তম বিসিএসের তথ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তবে প্রথম গেজেটে নাম থাকলেও বাদ পড়েছেন বিসিএসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় গেজেট থেকে। এছাড়াও তিনি টানা ছয় বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং চারটি বিসিএসের ভাইভা দিয়েছেন।
তানজীম হাসানের বাড়ি কক্সবাজার জেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে একটি প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কর্মরত আছেন। তার বাবা একজন প্রবাসী।
গেজেট থেকে বাদ পড়া প্রসঙ্গে তানজীম বলেন, ‘গত ৩০ ডিসেম্বর প্রকাশিত গেজেটে আমার নাম না থাকায় শুধু আমি নই, আমার আশেপাশের সবাই অবাক হয়েছেন। পড়ালেখা করেছি উপজেলার স্কুল-কলেজে। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হয়েছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছাত্রজীবনের কোনো স্তরে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে বিন্দু পরিমাণ সংশ্লিষ্টতা আমার ছিল না। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছি। চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানেও আন্দোলনের পক্ষে লেখালেখি করেছি। তাছাড়া আমার পরিবারেও কেউ রাজনীতির সাথে যুক্ত নয়। আমার একজন গৃহিণী আর বাবা ২৭ বছর যাবৎ দেশের বাইরে আছেন। আত্মীয় স্বজনের মধ্যেও কেউ কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।’
তিনি বলেন, ‘চারটি সংস্থা ভ্যারিফিকেশন করেছে। এর মধ্যে ৩টি সংস্থার রিপোর্ট পজিটিভ। শুধু একটি সংস্থার নেগেটিভ রিপোর্টের বলি আমি। সরকারের কাছে অনুরোধ আমার বিষয়ে সুষ্ঠূ তদন্ত করা হোক। যদি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে যদি আমি কোনো ফৌজদারি অপরাধে অপরাধী না হই, তাহলে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের কষ্টার্জিত চাকরি আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। বিনা অপরাধে কারো কষ্টার্জিত রিযিক কেড়ে নেওয়ার চেয়ে বড় জুলুম আর আছে কিনা জানা নাই। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমার আরজি—এই জুলুম থেকে আমাকে উদ্ধার করুন, ইনসাফ করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘টানা ৬টি বিসিএসের প্রিলিতে উত্তীর্ণ হয়েছি, চারটি বিসিএসের ভাইভা দিয়েছি। বিসিএসের এই ৬-৭ বছরের জার্নিতে অনেকগুলো ঈদে বাড়ি যাইনি। বছরের পর বছর স্ট্রাগল করে স্বপ্ন যখন সত্যি হলো ঠিক তখনও আমি ঈদে বাড়ি যেতে পারলাম না। কারণ ৪৩তম বিসিএসের তৃতীয় গেজেটেও আমার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি। গেজেট বঞ্চিত হওয়ার পর থেকে আমার পরিবারের কারো মনে কোনো আনন্দ নেই। এবারের ঈদুল আজহাও নিঃসঙ্গভাবে ঢাকায় কাটিয়েছি ৷ বাসায় যাওয়ার সাহস-শক্তি হয়নি। পরিবারের সবার কাতর চাহনির চেয়ে নিঃসঙ্গ-নির্বাসিত জীবনই শ্রেয়।’