ভারতের হারে বাংলাদেশ যেন জিতে যায়, কেন?

বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৯-এর প্রথম সেমিফাইনালে এক শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ভারতকে ১৮ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টিবিঘ্নিত এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ২৩৮ রানের সংগ্রহ করেছিল নিউজিল্যান্ড। ২৪০ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে ৬ রানেই দলের সেরা তিন ব্যাটসম্যানসকে হারায় ভারত। শেষের দিকে জাদেজা ও ধোনির সাহসী ব্যাটিংয়ে ম্যাচটি জমিয়ে তুললেও হার এড়াতে পারেনি ভারত। ফলে বিশ্বকাপের সবচেয়ে ফেভারিট দলটিই বাদ পড়ে গেল সেমিফাইনাল থেকে । অসাধারণ এই জয়ে ফাইনালে টিকিট পেয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড।

এদিকে ভারতেই এই হারকে কেন্দ্র করে সোস্যাল মিডিয়ায় যেন তুফান উঠেছে। ফেসবুক, টুইটারের টাইমলাইনে ভারতবিরোধী সব পোস্টে ভরে গেছে। রীতিমত যেন উৎসব শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু কেন ক্রিকেটপ্রেমিরা এতটা ভারত বিদ্বেষী হয়ে উঠলো? বিশ্বের বাঘা বাঘা খেলোয়ার নিয়ে ভারতীয় দল গড়া। যারা ক্রিকেটকে অনন্য উচ্চতায়ও নিয়ে গেছে। কিন্তু তাঁদের হারে কেন এত খুশি বাংলাদেশ, পাকিস্তান বিশ্বের অন্যসব দেশের ক্রিকেটপ্রেমিরা?

মূলত ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের দগদগে ক্ষত এখনো ভুলতে পারেনি বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমিরা। তাঁরা মনে করেন ২০১৫ সালের সেই কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে এক রকম জোড় করেই বাংলাদেশকে হারিয়েছিল ভারত। রুবেলের বলে রোহিত শর্মার আউট না দিয়ে নো বল ডাকা, মাহমুদউল্লার বির্তকিত ক্যাচ আউট দিয়ে ম্যাচটি ছিনতাই করে নিয়েছিল ভারত। সেই থেকেই ভারতবিদ্বেষী একটি মনোভাব এদেশের ক্রিড়াপ্রেমিদের মাঝে ঢুকে যায়। আজকের হারে সেটাই উগরে দিয়েছে এ দেশের লক্ষকোটি ক্রিকেট ভক্তরা।

এছাড়াও অন্যদেশগুলোকে ছোট করে দেখার মনোভাব, মাঠে ভারতীয় ক্রিকেটারদের উগ্র উল্লাস, অতি অহংকারী মনোভাবের কারণে অনেক ক্রিকেটপ্রেমি ভারতবিদ্বেষী। ভারতীয় মিডিয়া সব সময়ই অন্য দলগুলোকে হেয় করে উপস্থাপন করে থাকে। দলগুলোকে ছোট করে এমনভাবে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন, সোস্যাল মিডিয়ায় ট্রল তৈরি করে যেন ভারতীয় ক্রিকেট দলই বাঘ, অন্যদলগুলো বিড়াল। এটা অন্যদেশগুলোর ক্রীড়াপ্রেমিদের কাছে বেশ অপমানজনক।

১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারত ক্রিকেটের সব চেয়ে বড় বাজার। আইসিসির ৮৫ % রাজস্ব আসে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড থাকে। এজন্যে আইসিসিও বিভিন্ন সময় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কাছে বাঁধা থেকে যায়। রাজস্ব, টিভি সম্প্রাচারের বড় একটা অংশের জন্য অনেক সময় ভারতীয় বোর্ডের ইচ্ছামাফিক চলতে দেখা যায় আইসিসির। ভারতীয় দলের সুবিধা অনুযায়ি ভেন্যু, খেলার পিচ, শিডিউল তৈরি করে এবারেও বির্তকিত হয়েছে আইসিসি। এজন্য অনেক ব্যাঙ্গ করে আইসিসিকে ইন্ডিয়া ক্রিকেট কাউন্সিলও বলে থাকে।

মোট কথা ক্রিকেট বিশ্বে মোড়ল তত্ত্বের সৃষ্টি করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেট যে ভদ্রতার খেলা, সেটা ধূলিসাৎ করেছে তাঁরা। এজন্যেই মূলত ভারতের হারে জিতে যায় বিশ্ব, হেরে যায় ভারত।


সর্বশেষ সংবাদ