দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষক রাঙামাটির রুপনা

রুপনা চাকমা
রুপনা চাকমা  © ফাইল ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ। শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের সফরে বাংলাদেশ ছিল অদম্য, অকুতোভয়। সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানী সরকাররা প্রতিপক্ষের জালে গোল বন্যা বইয়ে দিলেও বাংলাদেশের জাল ছিল সুরক্ষিত। এটা সম্ভব হয়েছে দারুণ রক্ষণভাগের পাশাপাশি গোলবারের নিচে একজন অতন্দ্র প্রহরী থাকায়।

রুপনা চাকমা, বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের গোলরক্ষক। উচ্চতা মাত্র ৫ ফুট। কিন্তু এই উচ্চাতা দিয়েই দুর্দান্তভাবে গোল পোস্ট সামলে যাচ্ছেন রুপনা। এবারের সাফে তার হাত ফাঁকি দিয়ে বল বেরিয়েছে মাত্র একবার। দারুণ এই কীর্তির স্বীকৃতি হিসেবে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জিতেছেন রাঙামাটি থেকে উঠে আসা এই ফুটবলার। রুপনার গায়ে এখন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষকের ট্যাগ। 

পুরো আসরে শাসন করে খেলা বাংলাদেশ ৫ ম্যাচে গোল দিয়েছে ২৩টি, বিপরীতে গোল হজম করেছে মাত্র একটি। সেটাও ফাইনালে এসে। আগের চার ম্যাচে প্রতিপক্ষকে দমিয়ে বারবার জাল খুঁজে নেওয়া বাংলাদেশের রক্ষণভাগেও হানা পড়েছে, গোলমুখে এসেছে শট। ভরসার গ্লাভসজোড়া দিয়ে সেসব সামলে নিয়েছেন রুপনা।

ফাইনালের আগ পর্যন্ত চার ম্যাচে বাংলাদেশ গোল করেছে ২০টি। মালদ্বীপকে ৩-০ গোলে, পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে, ভারতকে ৩-০ গোলে এবং সেমি-ফাইনালে ভুটানকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। এই চার ম্যাচে বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে জিতলেও গোল হজম করতে পারতো। কিন্তু জমাট রক্ষণভাগ ও গোলরক্ষক রুপনার দৃঢ়তায় নিজেদের জাল সুরক্ষিত রাখে বাংলাদেশ। 

ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে বেশ কিছু সেভ করেন রুপনা। প্রথম মিনিটে আক্রমণ সাজায় বাংলাদেশ। মারিয়া মান্দার বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার শট গোলরক্ষক আটকালেও পুরোপুরি গ্লাভসে জমাতে পারেননি। আলগা বলে স্বপ্নার শটেও কর্নারের বিনিময়ে ফেরান আঞ্জিলা থুম্বাপো সুব্বো। এরপরই পাল্টা আক্রমণে ওঠা নেপালের প্রচেষ্টা অনেকটা লাফিয়ে গ্লাভসে নেন রুপনা চাকমা।

২৩তম মিনিটে অনিতা কেসির শট আটকে দারুণভাবে গ্লাভসে নেন রুপনা। কিছুক্ষণ পর অনিতার আরেকটি চেষ্টা প্রতিহত করেন রুপনা। ৩৪তম মিনিটে আবারও তার ঝলক। বক্সের বাইরে নেপালের অনিতার ছোট ফ্রি-কিকে দিপা সাশির শট ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান বাংলাদেশের গোলরক্ষক। 

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে অনিতা কেসিকে তুলে দলের তারকা ফরোয়ার্ড সাবিত্রা ভাণ্ডারিকে নামান নেপাল কোচ। একটু পরই রুপনার দৃঢ়তা আর পোস্টের বাধায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ঘুরে দাঁড়ানো নেপাল ৭০তম মিনিটে গোল পায়। বক্সের ভেতরে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো কোনাকুণি শটে বল জালে জড়ান বাসনেত। রুপনা ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি। পুরো টুর্নামেন্টে এই একবারই তার গ্লাভস ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়েছে। 


সর্বশেষ সংবাদ