বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সুযোগ, আবেদন শেষ আজ

ইয়েস প্রোগ্রামে মাধ্যমিক শিক্ষার্থী নিজ দেশে পড়ার সুযোগ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ইয়েস প্রোগ্রামে মাধ্যমিক শিক্ষার্থী নিজ দেশে পড়ার সুযোগ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সুযোগ দিচ্ছে কেনেডি-লুগার ইয়ুথ এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড স্টাডি বা ইয়েস প্রোগ্রাম। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আবেদনকারীদের মধ্যে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির পরিবারের আতিথেয়তায় এক শিক্ষাবর্ষ অবস্থান করবে এবং আমেরিকার মাধ্যমিক স্কুলে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল ৪টায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট’র অর্থায়নে সেখানকার শিক্ষার্থীদের সাথে সমন্বিতভাবে পড়াশোনা ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য মেধাভিত্তিক এ স্কলারশিপ দেয়া হবে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও এ কার্যক্রমে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবে। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের অর্থায়নে ইয়েস প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশের ৮-১১ গ্রেডে ভালো ফল করা মাধ্যমিক (হাইস্কুল) শিক্ষার্থীরা এক বছর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের জন্য স্কলারশিপ প্রদান করা হয়।

কেনেডি-লুগার ইয়েস প্রোগ্রামের মাধ্যমে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। ইয়েস বৃত্তি একটি মেধাভিত্তিক ও উন্মুক্ত কার্যক্রম। এতে বিনা মূল্যে আবেদন করা যাবে। ২০০৪ সাল থেকে তিন শতাধিক বাংলাদেশি হাইস্কুল শিক্ষার্থী ইয়েস কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছে।

সুযোগ-সুবিধা 
ইয়েস প্রোগ্রামের ব্যয়ভার অর্থাৎ বিমানভাড়া, মার্কিন ভিসা ফি, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা-খাওয়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন এবং মাসিক ১২৫ ডলারের হাত খরচ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্বরাষ্ট্র বিভাগ বহন করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়া এবং আসার বিমানভাড়া, প্রিডিপার্চার ওরিয়েন্টেশনের খরচ, আমেরিকান হোস্ট ফ্যামিলিতে প্লেসমেন্টের খরচ,মাসিক উপবৃত্তি, স্বাস্থ্যবিমা এবং প্রোগ্রামের আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের খরচ অংশগ্রহণকারীকে বহন করতে হবে না।

প্রতিটি শিক্ষার্থী একটি আমেরিকান হোস্ট ফ্যামিলির সঙ্গে বসবাস করবে। শিক্ষার্থীকে আমেরিকার যেকোনো অঙ্গরাজ্যে বসবাস করতে হতে পারে, যার ব্যবস্থা আমেরিকান প্লেসমেন্ট সংস্থা করে থাকে। তবে প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা শিক্ষার্থীদের পক্ষে অসম্ভব। এটি প্রোগ্রামের নিয়মাবলির বিরুদ্ধে এবং এই নিয়ম ভঙ্গ করলে শিক্ষার্থী একজন ফেডারেল অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হবে। শিক্ষার্থী পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবে না।

যোগ্যতা: 
* আবেদনকারীর বয়স ২০২৪ সালের ১৫ আগস্টে ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে হতে হবে।
* বর্তমানে বাংলাদেশি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম, দশম বা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি থাকতে হবে।
* বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি নাগরিকেরা আবেদনের জন্য যোগ্য হবে না।
* আবেদনের সময় অবশ্যই ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের নম্বরপত্র/মার্কশিট জমা দিতে হবে।
* বার্ষিক ফলাফলে গড়ে কমপক্ষে ‘বি’ গ্রেড থাকতে হবে।
* গত তিন শিক্ষাবর্ষের মধ্যে কোনো শিক্ষা বিরতি বা কোনো শ্রেণির পুনরাবৃত্তি থাকলে আবেদনকারীকে অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে।
* মার্কিন জে-১ ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে (যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা জে-১ ভিসা পাওয়ার অযোগ্য)।
* আবেদনকারী গত পাঁচ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৯০ দিনের অধিক বসবাস বা ভ্রমণ করে থাকলে তাকে অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে।
* আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশে বসবাসকারী স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
* কেউ দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী বা বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসরত হলে তার আবেদন বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।
* ইংরেজিতে কথা বলা ও লেখাপড়ার জন্য ইংরেজি ভাষায় পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকতে হবে।
* আবেদনকারী প্রার্থীর মা-বাবার যে কেউ অথবা উভয়ই যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বা যুক্তরাষ্ট্র মিশনের বর্তমান কর্মী হতে পারবেন না।

আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষার জন্য নিউজিল্যান্ডে কেন পড়াশোনা করবেন?

আবেদনকারীর যে যে যোগ্যতা বৃত্তি প্রাপ্তিতে সহায়ক হতে পারে:
* এক শিক্ষাবর্ষের জন্য নিবিড় শিক্ষাকার্যক্রম, সামাজিক সেবাকর্ম এবং শিক্ষাসফরে পুরোপুরি অংশ নেওয়ার আগ্রহ ও সক্ষমতা।
* আমেরিকার হাইস্কুল জীবনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এবং আমেরিকান কোনো পরিবারের আতিথেয়তায় থাকার প্রস্তুতি।
* পরিণত, দায়িত্বশীল, স্বনির্ভর, আত্মবিশ্বাসী, মুক্তমনা, সহনশীল, চিন্তাশীল ও অনুসন্ধানী বৈশিষ্ট্য।
* নিবিড় শিক্ষাকার্যক্রম, সামাজিক সেবাকর্ম ও শিক্ষাসফরে পুরোপুরি অংশ নেওয়ার আগ্রহ ও সক্ষমতা, ক্যাম্পাস জীবনের সঙ্গে সহজভাবে মানিয়ে নেওয়া, জায়গা ভাগাভাগি করে থাকার প্রস্তুতি, নিজ দেশের থেকে ভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক রীতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার আগ্রহ ও সক্ষমতা।
* আমেরিকার স্কুল ও জনসমাজে বাংলাদেশি সংস্কৃতিকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করার সক্ষমতা।
* কার্যক্রম শেষে বাংলাদেশে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি।

আবেদন প্রক্রিয়া:
ইয়েস প্রোগ্রামের বিস্তারিত এবং আবেদনের বিস্তারিত নির্দেশাবলি জানা যাবে লিংকে- (http://www.iearnbd.org/

https://bd.usembassy.gov/education-culture/student-exchange-programs/  আবেদনপত্র এ লিংকে পাওয়া যাবে।

আবেদনের নির্দেশাবলি পর্যালোচনার পর আরও কোনো প্রশ্ন থাকলে yesinfo@iearnbd.org বা DhakaUSExchanges@State.gov ঠিকানায় ই-মেইল করতে জানতে পারবেন আগ্রহীরা।


সর্বশেষ সংবাদ