কুবিতে একই আইনে দুই নীতি, বৈষম্যের স্বীকার জ্যেষ্ঠরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য প্রস্তাবিত নতুন 'আপগ্রেডেশন ও প্রমোশন' নীতিমালায় বৈষম্য দেখা দিয়েছে। নতুন নীতিমালায় একই শর্তে কনিষ্ঠ গ্রেডে যোগদানকারীরা চাকরি জীবনে চারবার পদোন্নতির সুযোগ পেলেও জ্যেষ্ঠ গ্রেডে যোগদানকারীরা সুযোগ পাচ্ছেন মাত্র তিনবার। ফলে, জ্যেষ্ঠ গ্রেডে যোগদান করেও চাকরি শেষে কনিষ্ঠদের সাথেই তাঁদের অবসরে যেতে হবে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ ৮৫ তম সিন্ডিকেট সভায় এ নীতিমালা অনুমোদন হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালার ৪ নং শর্তে বলা হয়েছে ‘কোনো ৩য় শ্রেণির কর্মচারী চাকরি জীবনে সর্বাধিক ৪ বার আপগ্রেডেশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন, তবে ৭ম গ্রেডের উর্ধ্বে নয়।’ এ নীতিমালা অনুযায়ী তৃতীয় শ্রেণির অধীনে ১৪, ১৫ ও ১৬ তম গ্রেডে যোগদানকারী কর্মচারীরা অন্যান্য যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে যথাক্রমে ১১, ১০, ৯ ও ৭ম গ্রেড পর্যন্ত সর্বমোট চারবার পদোন্নতি পাবেন। একই শ্রেণির অধীনে ১১, ১২ ও ১৩ তম গ্রেডে যোগদানকারীদের পদোন্নতি ১০, ৯ ও ৭ম গ্রেডেই সীমাবদ্ধ থাকবে। অর্থাৎ একই শর্তের অধীনে কনিষ্ঠরা চারবার পদোন্নতি পেলেও জ্যেষ্ঠরা পাচ্ছেন মাত্র তিনবার। যেখানে ৪ নং শর্তের প্রথম অংশ অনুযায়ী তাদের পদোন্নতি ৫ম গ্রেড পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিল।

প্রস্তাবিত নীতিমালার ২৪ নং শর্তেও আবার ১১, ১২ ও ১৩ তম গ্রেডে সরাসরি নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীবৃন্দের পদোন্নতি ৭ম গ্রেড পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। যদিও সমসাময়িক অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ম গ্রেড পর্যন্ত এ পদোন্নতির সুযোগ রাখা হয়েছে।

২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমসাময়িকে প্রতিষ্ঠিত আরেকটি সরকারি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯ সালে জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যে কোনো পদোন্নতি বা আপগ্রেডেশন সর্বোচ্চ ডেপুটি রেজিস্ট্রার বা সমমানের পদ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে।’ এ পদ জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এর ৫ম গ্রেড হিসেবে স্বীকৃত। তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নীতিমালায় এ পদোন্নতি ৭ম গ্রেড হিসেবে স্বীকৃত সহকারী রেজিস্ট্রার বা সমমানের পদ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ কেউ মনে করছেন, ১ম ও ২য় শ্রেণিতে যোগদানকারী কর্মকর্তারা ৩য় শ্রেণিতে যোগদানকারীদের নিজেদের সমপর্যায় পর্যন্ত পদোন্নতি মানতে পারছেন না বলেই নতুন নীতিমালায় প্রশাসনকে চাপ দিয়ে এ বিভাজন তৈরি করছেন। যদিও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ৫২ তম সিন্ডিকেট সভায় ৩য় শ্রেণিতে যোগদানকারীদের জন্য গ্রেড সীমাবদ্ধতার কোন শর্ত উল্লেখ করা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১১ তম গ্রেডে যোগদানকারী এক কর্মকর্তা বলেন, ১ম ও ২য় শ্রেণির কর্মকর্তারা ৩য় শ্রেণির কর্মচারীদের নিজেদের সমপর্যায়ে পদোন্নতি চান না বলেই বৈষম্যমূলক নতুন এ নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এর ফলে একটি অংশ চারবার পদোন্নতি পাবেন বলা হলেও বাস্তবে তাঁরা তিনবার পাচ্ছেন।

এদিকে গত ৩১ জুলাই ১১, ১২ ও ১৩ তম গ্রেডে যোগদানকারী ১৯ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদোন্নতি নীতিমালায় এ বৈষম্য নিরসনে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। স্মারকলিপিতে তাঁরা বলেন, প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে তাদেরকে চারটি পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করতেই ‘তবে ৭ম গ্রেডের উর্ধ্বে নয়’ কথাটি যুক্ত করা হয়েছে।

কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৪ নং শর্তের ‘তবে ৭ম গ্রেডের উর্ধ্বে নয়’ শব্দগুচ্ছ ও ২৪ নং শর্তটি রহিত করার নির্দেশ দিতে উপাচার্যের প্রতি অনুরোধ করেন।

এসব বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি উপ-উপাচার্যের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা ১১ থেকে ১৬ তম গ্রেডকে ক্লাস্টার (নির্দিষ্ট শ্রেণি) ধরেই এ নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। আমরা বিষয়গুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে বৈষম্যের সুযোগ নেই।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence