বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ ভুক্তভোগীর

প্রেমিকাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েও অন্য মেয়েদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কুবি ছাত্রের

নোবেল
নোবেল   © টিডিসি ফটো

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান নোবেলের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ওই ছাত্রীকে নানা সময়ে মানসিক নির্যাতন ও এক সম্পর্কে চলাকালীন একাধিক সম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে শাহরিয়ার খান নোবেলের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে নোবেলের কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়লে এইসব বিষয়ে জানা যায়।

এ ঘটনায় কুবির ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধানের নিকটে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। সম্প্রতি বিভাগটির বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) কাজী এম আনিছুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
 
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সম্পর্কের শুরু থেকেই ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আসছেন শাহরিয়ার খান নোবেল। এই সময়ে ওই ছাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করারও চেষ্টা করেন তিনি।

অভিযোগ পত্রে ওই ছাত্রী বলেছেন, সম্প্রতি নোবেল সম্পর্ক থেকে সরে আসার কথা লোক-সম্মুখে প্রচার করলেও আমার সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যায় ও নানাভাবে আশ্বাস দিয়ে যায়। তার সঙ্গে যোগাযোগের কথা অন্যদের জানাতে নিষেধ করে। যোগাযোগ না করলে নোবেল নানাভাবে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে এবং যোগাযোগ করলে আমাকে অপমান করে। সম্প্রতি একই বিভাগের আরও কিছু মেয়ের নিকট আমার অগোচরে আমার সাথে সম্পর্ক নেই বুঝিয়ে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়া ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে নোবেল। আমি জেনে যাওয়ায় নোবেল আমাকে নিয়ে অপপ্রচার চালায় এবং আমাকে দোষারোপ করে। 

অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী আরও বলেছেন, ২০১৯ সালে আমার (অভিযোগকারীর) পরিবার থেকে বিয়ের চাপ দেওয়া হয়। তখন আমি আমার ক্যারিয়ার ও তার সাথে সম্পর্কের কথা চিন্তা করে বাসা থেকে চলে আসি এবং তৎকালীন বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া ও প্রভাষক কাজী এম আনিছুল ইসলামকে জানাই। তখন আনিছুল ইসলামের  উপস্থিতিতে আমার দায়িত্ব নিবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় নোবেল।

আরও পড়ুন : ১৪ দিন শেষে রাবির প্রাথমিক আবেদন প্রায় সাড়ে তিন লাখ

এ ব্যাপারে শিক্ষক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া জানান, আমার এ ধরনের কোনো কিছু মনে পড়ছে না। এসব বিষয়ে আমি কিছু জানি না। 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহরিয়ার খান নোবেল জানান, আমার একেক সময়ে একেকজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তা এখন শেষ হয়ে গেছে। সম্পর্ক থাকাকালীন সময়ে কথাবার্তা হয়েছে। এখন মানসিক হেনস্থার কি অভিযোগ আসে আমি জানি না। আমি অবগত না। 

‘বিভাগ থেকে কী বলা হয়েছে’ এমন প্রশ্নে নোবেল বলেন, ডিপার্টমেন্ট বলেছে (যদি) সম্পর্ক না রাখতে চাও, তাহলে সম্পর্ক বাদ দাও।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী উপদেষ্টা ও সহকারী অধ্যাপক আলি আহসান জানান, আমরা দু'জনের সাথে কথা বলে কাউন্সিলিং করার চেষ্টা করেছি। আইনি পদক্ষেপ বা শাস্তি দেওয়ার কোন পদক্ষেপ বিভাগের থাকে না।
আলি আহসান আরও বলেন, আমি ও বিভাগের আরেকজন শিক্ষক মিলে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের কথা শুনেছি। যেভাবে কাউন্সিলিং করে সেভাবে কাউন্সিলিং করেছি। আমরা মনে করেছি কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে অভিযোগটা সমাধান করা সম্ভব।

তবে এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) কাজী এম আনিছুল ইসলাম। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এটা কনফিডেন্সিয়াল। একজনের বিষয়ে তো আমি এভাবে বলতে পারি না। আমার কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। এটা সল্যিউশন হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো কমেন্ট করতে পারছি না। আপাতত নো কমেন্ট। 


সর্বশেষ সংবাদ