নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞপ্তির নিয়ম ভেঙে ৮ শিক্ষার্থীকে ভর্তি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের আওতায় থাকা ৭ বিভাগে বিজ্ঞপ্তির নিয়ম ভেঙে ৮ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে  বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার শেষ হয় ২য় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম। ভর্তির নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোতে ৩৫০টি আসনের বিপরীতে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা এবং মানবিক বিভাগ হতে যথাক্রমে ১২৪, ৫১ এবং ১৭৫ জন করে ভর্তির কথা থাকলেও এই নিয়ম মেনে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করেনি প্রশাসন।

জানা যায়, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগ গুলোতে ব্যবসায় শাখা হতে ৫১ জনের বদলে ভর্তি করে ৪৩ জন। সেই হিসেবে ব্যবসায় শাখা হতে আরো ৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার নিয়ম থাকলেও তা না মেনে মানবিক ও বিজ্ঞান শাখা থেকে ৮ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করায় অনুষদটি। 

আরো পড়ুনঃ একাধিক সাক্ষাৎকারেও যোগ্য শিক্ষক পায়নি সংস্কৃত-উর্দু বিভাগ

এই ভর্তি করার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক আজিজুর রহমান।

৮ শিক্ষার্থী ভর্তি করার বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক আজিজুর রহমান বলেন, এটি কেন্দ্রীয় ভাবেই সিদ্ধান্ত, অনুষদের নয়। যা হয়েছে সব নিয়ম মেনেই হয়েছে। আমরা ২য় মেধা তালিকায় যারা ছিলো তাদের ভর্তি কার্যক্রম করতে গিয়ে দেখি ব্যবসায় শাখা হতে আর প্রার্থী নেই তাই অন্য বিভাগ থেকে নিয়ে আমরা ভর্তি কার্যক্রম শেষ করি।

তবে এটিকে কেন্দ্রীয় ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার কমিটির সিধান্ত নয় বলে জানিয়েছেন সেই কমিটির একাধিক সদস্য।

একাধিক শিক্ষকর অভিযোগ, ৩য় মেধাতালিকা প্রকাশ না করেই বিজ্ঞপ্তির বাইরে গিয়ে ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, মুক্তিযোদ্ধার কোটায় কিংবা আদিবাসীর কোটায় কি অন্য কোটার কেউ ভর্তি হতে পারে? কিংবা উচিত? অবশ্যই হয় না এবং উচিতও নয়। তাই ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীর জন্যে এটা প্রাপ্য। সেই শাখার বাইরে হঠাৎ করে নতুন সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের কেবল প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমার জানামতে অনেকেই একাধিক বিভাগে সুযোগ পাওয়ায় তারা অনুষদ পরিবর্তন করছে। বাণিজ্যের যে সকল শিক্ষার্থী তাদের প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে তাদের যেন সেখান থেকে ভর্তি করা হয়।

অন্যদিকে বিভাগ ভিত্তিক শিক্ষার্থী ভর্তির নোটিশ প্রকাশের সত্যতা স্বীকার করেছেন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তি সংক্রান্ত টেকনিক্যাল উপকমিটির সদস্যসচিব ড. সেলিম আল মামুন ।

তিনি ৮ শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেছি। আর আপনাদের থেকে জানা ৮ শিক্ষার্থীর বিষয়টি অনুষদ কমিটি বলতে পারবেন। হয়তো তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কমিটিকে হয়তো জানাবে।

বিভাগ ভিত্তিক শিক্ষার্থীর তালিকার বাইরেও ভর্তি করা যাবে এমন কোন সিদ্ধান্ত প্রকাশ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এমন কোনো তথ্য বা সিদ্ধান্ত আমরা প্রকাশ করিনি।

সামজিক বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয় চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি। যেখানে ১ম মেধা তালিকায় ডাক পায় বিজ্ঞান শাখা হতে ১ থেকে প্রথম ২৪৮ জন, মানবিক থেকে ১ থেকে ৩৫০ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ডাক পায় প্রথম ১০২ জন। আসন শূন্য থাকায় প্রকাশিত হয় ২য় মেধা তালিকা। যেখানে বিজ্ঞান শাখা হতে ২৪৯ থেকে ৬২৫, মানবিক শাখা হতে ৩৫১ থেকে ৮৫০ এবং ব্যবসায় শিক্ষা হতে ১০৩ থেকে ২২০ জন। বৃহস্পতিবার শেষ হয় ২য় মেধা তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ ।

অভিযোগ উঠেছে পছন্দের প্রার্থীদের ভর্তি করাতেই নিয়ম ভেঙ্গে তড়িঘড়ি করে ভর্তি করানো হয়েছে শেষ সময়ে অনুষদটিতে। 

৮ জনের ভর্তি কার্যক্রমের ব্যাপারে রেজিস্ট্রার ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, এটি আমার জানা নেই। এগুলো ইউনিট কমিটি দেখে। আর যেহেতু আমাদের সিদ্ধান্ত ছিলো ২৭ তারিখের মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা সে জন্যে ৩য় মেধা তালিকার দিকে হয়তো আর আগানো হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। আমাদের অফিস সময়ের বাইরে যেয়েও কাজ করতে হচ্ছে। ২৭ তারিখের মধ্যেই ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে তাই ২য় মেধা তালিকায় থাকাদের মধ্য থেকেই ভর্তি করানো হয়েছে। তবে কেউ আসলে আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে সেটির আলোচনা হতে পারে। আমি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সঙ্গে কথা বলে দেখছি কি করা যায় ।


সর্বশেষ সংবাদ