১৫ বছর ধরে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সনদ লেখেন তিনি

  © টিডিসি ফটো

প্রতিটি নাম তিনি স্বচ্ছ করে হৃদয়ের মাধুরী মিশিয়ে লিখেন। স্পষ্ট অক্ষরগুলো গেঁথে তৈরি করেন চারিত্রিক সনদ। অবিরাম চলছে ১৫ বছর ধরে। কখনো শিক্ষার্থীরা অফিস টাইমের পরেও এসে অনুরোধ করলে তিনি ফেলতে পারেন না, লিখে দেন সনদ। বলছি ঢাকা কলেজের অফিস সহায়ক মশিউর রহমানের কথা।

তিনি ক্যাম্পাসের অতি পরিচিত মুখ। শিক্ষার্থীদের কাছে মশিউর ভাই নামেই পরিচিত। শুধু যে তিনি অফিসের বিভিন্ন কাজই করেন তা নয় বরং তাঁর হাতের লেখাতেই কলেজের উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক সনদ, প্রশংসাপত্রের পূর্ণতা আসে।

সুন্দর টানা হাতের লেখার ভাঁজে নিপুণ দক্ষতায় ভরে তোলেন ফাঁকা সনদের পাতা। তবে এই টানা লেখার পেছনে তার নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। ঢাকা কলেজের অফিসে যুক্ত হওয়ার পর পাশের সহকর্মীর সনদ লেখা দেখে মুগ্ধ হয়ে নিজেও ইচ্ছা পোষণ করেন তা শেখার। সহকর্মীদের সহযোগিতা আর নিজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই পরবর্তীতে পুরোপুরি রপ্ত করেছেন এই বিদ্যা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে আলাপচারিতায় মশিউর জানালেন, দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিজের হাতে লিখেছেন ঢাকা কলেজের ৫ হাজার শিক্ষার্থীর চারিত্রিক সনদ। টানা হাতের লেখায় সুন্দর একটি সনদ শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়াতেই তাঁর সব আনন্দ।

একদিনে সর্বোচ্চ কতটি সনদ লিখেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মশিউর বলেন, অফিসে শুধুমাত্র আমি একাই নয় সাথে আরও তিনজন রয়েছেন যারাও সনদ লেখার কাজে সহযোগিতা করেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি একদিনে সর্বোচ্চ ৩০০টি পর্যন্ত সনদ লিখেছি।কখনো বিরক্ত লাগে কিনা জানতে চাইলে বলেন, অফিসের নিয়মিত কাজের পরই আমাকে এসব কাজ করতে হয়। একটানা বেশিক্ষণ না করেই কিছুটা সময় নিয়েই লিখতে বসি করি যাতে কখনো বিরক্তি ভাব না আসে।

ঢাকা কলেজের ১৮০ বছর পূর্তিতে অনুভূতি জানতে চাইলে মশিউর বলেন, সকালে কলেজে আসি আর বাড়ি ফিরতে হয় রাতে। ঢাকা কলেজের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এমনটা সম্ভব ছিলনা। ঢাকা কলেজে চাকরি করতে পারাটা অনেক বেশি সৌভাগ্যের বলে মনে করি।


সর্বশেষ সংবাদ