ট্রেনের নাম ‘শাটল’ কেন?

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন  © ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা উঠলে প্রথমেই যে স্মৃতিটা সামনে চলে আসে, তা হলো ‘শাটল ট্রেন’। শাটলকে শুধু ট্রেন বললে ভুল হবে; গান, আড্ডা, রাজনীতি এমনকি পড়াশোনার সার্কেলটাও গড়ে ওঠে এটাকে ঘিরে। তবে দিন যত গড়াচ্ছে, শাটলের ঐতিহ্যও তত হারাতে বসেছে।

তথ্যমতে, ১৯৮৪ সালে চালু হওয়ার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এটি। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে দুটি শাটল ট্রেন রয়েছে; যা বটতলি রেলওয়ে স্টেশন থেকে চবি রেলওয়ে স্টেশন এবং সেখান থেকে পুনরায় বটতলি রেলওয়ে স্টেশনে যাতায়াত করে। প্রতিটি ট্রেনেই ৯টি করে বগি যুক্ত রয়েছে।

ট্রেনের ছাদ থেকে শুরু করে দরজা পর্যন্ত কোথাও তিলধারণের ঠাঁই নেই। গরমে ঘেমে-নেয়ে
অস্থির সবাই। তবু কী আনন্দ ছড়ানো মুখে!

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন-প্রবীণ অনেক শিক্ষার্থীর মাঝেই ট্রেনের নাম ‘শাটল’ কেন— তা নিয়ে কৌতুহল রয়েছে। বিষয়টি যে শুধু শিক্ষার্থীদের অজানা তা নয়; বাংলাদেশ রেলওয়ের (চট্টগ্রাম) কর্মকর্তারাও স্পষ্ট করে বলতে পারেনা ‘শাটল’ নামকরণের মূল কারণ। তবে নামকরণ যেহেতু হয়েছে; কারণও নিশ্চয় আছে।

উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, ‘শাটল ট্রেন এমন একটি ট্রেন; যা দুটি পয়েন্টের মধ্যে সামনে-পেছনে চলাচল করে। বিশেষত এটি একটি সংক্ষিপ্ত রুটে নিয়মিত পরিষেবা দিয়ে থাকে। শাটল ট্রেনগুলো বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়। এগুলো যাত্রী, মালবাহী বা উভয়কে বহন করতে ব্যবহৃত হতে পারে’।

আসনে হয়তো শ্রী নেই, কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর নিজের অজান্তেই
মনের সঙ্গে মিশে গেছে শাটলের সিট; যা তারা নিজেরাও জানে না।

বাংলা একাডেমি ‘shuttle service’ এর বাংলা অর্থ করেছে এভাবে, ‘অল্প ব্যবধানে অবস্থিত স্থানসমূহের মধ্যে (ট্রেন, বাস ইত্যাদির) নিয়মিত চলাচল ব্যবস্থার বাহন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসানও একই সুরে বলেন, যদি যোগাযোগ রক্ষার জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আসা যাওয়া সবসময় ট্রেন নির্ভর যাতায়াত হয়, তাহলে এ ধরনের ট্রেনগুলোকে ‘শাটল ট্রেন’ বলা হয়ে থাকে।

শাটল ট্রেনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অস্তিত্ব যেন মিশে আছে; যা থেকে চাইলেও আলাদা হওয়া সম্ভব নয়। হয়তো যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই তাদের নিজস্ব পরিবহনে নবধারা এনেছে। যুক্ত করেছে উন্নতমানের এসি বাস, মাইক্রো, মেট্রোসহ কত কী! এক্ষেত্রে চবি শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ‌‌‌শাটল আছে কী?

তবে এত কিছুর পরও কিছু সমস্যা রয়েছে। এক ছাত্রী বলছিলেন, জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, ঘেমে ভিজে যাওয়া কিংবা ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়া— এমন ভয় তো থাকেই। তারপরও শাটল তো শাটলই। এটাকে ভোলা যাবে না।


সর্বশেষ সংবাদ