বৃষ্টিও থামাতে পারেনি বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের, চলছে আন্দোলন

বৃষ্টি উপেক্ষা করেও উপাচার্য অধ্যাপক খোন্দাকার নাসিরউদ্দীনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। আজ রবিবার টানা চারদিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বিকালের ঝড়-বৃষ্টিও থামাতে পারেনি বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দাবি আদায়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন।

আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী জানান, ‘রোদ বৃষ্টি যাই হোক না কেনো উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। একমাত্র উপাচাযের পদত্যাগ ব্যতিত হামলা বা কোনো কিছু দ্বারাই আমাদের আন্দোলন থামানো যাবে না।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে তাদের ওপর অন্তত পাঁচ বার হামলা হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, ভিসির ভাড়া করা স্থানীয় গুন্ডাবাহিনীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে বিভিন্ন স্থানে লাঠি, রামদা এবং ইট নিয়ে হামলা করেন।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘উপাচার্যের নির্দেশে আমাদের ভাইয়েদের ওপরে হামলা হয়েছে, তারা তাদের শরীর থেকে রক্ত ঝরিয়েছে। একজন উপাচার্য কতটা নিচু মন মানসিকতার হলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাতে পারে? আমরা অবিলম্বে এই উপাচার্যের পদত্যাগ চাই’।

তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর কে বা কারা হামলা করেছে, তা আমার জানা নেই। আজ এক বিবৃতিতে হামলার নিন্দাও জানান ভিসি।

বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ফেসবুকে লেখার জেরে ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপাচার্যের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন। উপাচার্য বহিষ্কারাদেশ তুলে নেন। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে জোর আন্দোলন গড়ে তোলেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৪টি সিদ্ধান্ত নিয়ে তা রেজিস্ট্রার মো. নুরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি আদেশে প্রকাশ করে। ওই আদেশের ৪ নম্বরে বলা হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাক্‌স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার করা হবে না। আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান করা হবে না। যে ফেসবুকে লেখালেখিকে কেন্দ্র করে এত কিছু, সে বিষয়ে আদেশের ১২ নম্বরে বলা হয়, ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে না।


সর্বশেষ সংবাদ