নিয়োগে অনিয়ম, চবির ৪৬ জনকে দুদকে তলব

  © ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, ডিন, সাবেক প্রক্টরসহ ৮ শিক্ষক, ৩ কর্মকর্তা এবং ৩৫ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলামের সই করা এক অফিস আদেশে এসব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে আগামী আগস্টের নির্ধারিত সময়ে দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে নিজেদের বক্তব্য প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে।

দুদকের তলব করা ৮ শিক্ষকের মধ্যে রয়েছেন, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এএফএম আওরঙ্গজেব, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বিজ্ঞান ওয়ার্কশপের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. শফিউল আলম, সাবেক প্রক্টর প্রফেসর মো. আলী আজগর চৌধুরী।

তালিকায় আছেন, শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট প্রফেসর মো. গোলাম কবীর, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতি ড. মো. সুমন গাঙ্গুলী, ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস এর পরিচালক মো. জাহেদুর রহমান এবং পরিবহন দফতরের প্রশাসক প্রফেসর ড. মো. রাশেদ উন নবী।

৩ কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নুর আহমদ, হিসাব নিয়ামক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফরিদুল আলম এবং উপাচার্য দফতরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (কম্পিউটার) মো. জাহাঙ্গীর আলম।

অফিস আদেশে এসব শিক্ষক, কর্মকর্তাকে আগামী ২২ আগস্ট দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলামের কাছে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বপালনের শেষ সময়ে এসে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে ১৪২ জনকে নিয়োগ প্রদানের জন্য গঠিত সিলেকশন বোর্ডে এসব শিক্ষক, কর্মকর্তা সিলেকশন বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

এদিকে ওই সময়ে নিয়োগ পাওয়া ৩৫ কর্মচারীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলামের কাছে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের বিষয়ে তিন ধাপে তাদের বক্তব্য দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রথম ধাপে আগামী ১৯ আগস্ট মু. আলীমুল্লাহ, মো. শওকত জাহান পাপন, কায়সার হামিদ, তিন্নী সূত্রধর, মো. সুমন, নিশাত মিত্র, মুশফিক আহমেদ চৌধুরী, তাওহীদুল ইসলাম, নাজমুস সাআদাত সাকিব, মো. তৌহিদুল আজিম, মো. জামশেদ আলম, শাহীন আক্তারসহ ১২ জনকে বক্তব্য দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২০ আগস্ট  মো. মনজুর মিয়া, জিন্নাত রেহেনা, মো. রেজাউল করিম, তাছলিমা আক্তার, মহিউদ্দিন রনি, মো. নাঈম উদ্দীন, মো. তানজীম হোসেন, মো. শহিদুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, মাসুদুর রহমান, মো. রাকিব উদ্দিন, মো. সাখাওয়াত হোসেনসহ ১২ জনকে বক্তব্য দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

তৃতীয় ধাপে আগামী ২১ আগস্ট মনসুর আলী, মো. ইব্রাহিম খলিল, মো. ওসমান, মানিক চন্দ্র দাস, আব্দুল শুক্কুর, ইফফাত ফাতেমা, মো. মিজানুর রহমান, মু. শহিদুল আলম, মো. আমতারুল হক, এসএম আলাউদ্দিন এবং রাশেদা বেগমসহ ১১ জনকে বক্তব্য দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফুল কবির চন্দন জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও বিধি বহির্ভূতভাবে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে ১৪২ জনকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ অনুসন্ধানে চবির ৪৬ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের বক্তব্য নেয়ার জন্য ডাকা হয়েছে।

তিনি বলেন, দুদক নির্ধারিত সময়ে তাদের অভিযোগ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে নিজেদের বক্তব্য প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং বক্তব্য নেয়া শেষে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ইউজিসির নির্দেশনা উপেক্ষা করে গত বছরের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৯তম সিন্ডিকেট সভায় ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে ১৪২ জনকে নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়। নানা অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত, অস্ত্রধারী, এমনকি চাকরির জন্য আবেদন না করা ব্যক্তিকেও ওই সময়ে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।


সর্বশেষ সংবাদ