ঢাকা কলেজের ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত তথ্যের সংকট, নেই তথ্য সংরক্ষণাগার

ঢাকা কলেজ
ঢাকা কলেজ  © সংগৃহীত

প্রতি বছর আইসিটি ফি নিলেও ঢাকা কলেজে নেই ই-লাইব্রেরি সেবাসহ নিজস্ব কোনো সফটওয়্যারের সুবিধা। এতে পর্যাপ্ত তথ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও অনুসন্ধানকারী ব্যক্তিরা।  

কলেজের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেছে, ‘অ্যাবাউট’ অপশনের অধীনে প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাস ও যোগাযোগের ঠিকানা ছাড়া বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই। ‘ডিপার্টমেন্ট’ বিভাগে শিক্ষকদের নাম ও পদবি এবং গবেষণাপত্রের  সংখ্যা উল্লেখ থাকলেও তাতে কী ধরনের গবেষণা প্রকাশ হয়েছে, তার কোন বিষয়বস্তু ও নথিপত্র ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি। বিভাগ ভিত্তিক ‘বিজ্ঞপ্তি’ সেকশন সম্পূর্ণ ফাঁকা। গ্যালারি অপশনে সাব ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাম থাকলেও কোন ছবি নেই। তবে রয়েছে বিক্ষিপ্ত আকারে কলেজের কিছু কর্মসূচি পালনের ছবি। এমনকি অ্যালামনাইয়ের তালিকাও অনুপস্থিত।

অন্যদিকে, কলেজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটার পর থেকে ১৯৬ হাজার ফলোয়ারের পেজটি কার্যক্রমহীন অবস্থায় রয়েছে। সবশেষ ২০২৩ সালে পেজের তথ্য হালনাগাদ করা হয়েছে।  

এদিকে, ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হালনাগাদের নির্দেশনা দেন। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠান পরিচিতি, প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি ও স্বীকৃতি, শ্রেণি ও লিঙ্গভিত্তিক শিক্ষার্থীর তথ্য, শ্রেণিভিত্তিক অনুমোদিত শাখার তথ্য, পাঠদানসংক্রান্ত তথ্য (রুটিন পাঠ্যসূচি, বিবিধ নোটিশ ইত্যাদি), এমপিও ও জাতীয়করণের তথ্য (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), প্রতিষ্ঠানের টেলিফোন বা মুঠোফোন নম্বরসহ যোগাযোগের ঠিকানা, প্রতিষ্ঠানপ্রধানসহ সব শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য, ব্যবস্থাপনা কমিটির তথ্য হালনাগাদ রাখতে হবে। তবে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও শিক্ষা অধিদপ্তরের অধিকাংশ নির্দেশনা পালন করেনি ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পড়ালেখার মান কেমন তা জানতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বছরভিত্তিক ফলাফলের তথ্য দ্বারা মূল্যায়ন করা হয়। কিন্তু বর্তমানে ঢাকা কলেজের পড়ালেখার মান জানার উপায় নেই। কলেজের ওয়েবসাইটে উচ্চমাধ্যমিক, অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের বছরভিত্তিক চূড়ান্ত ফলাফলের তথ্য ও উপাত্ত নেই। 

কলেজের ওয়েবসাইটে তথ্যের সীমাবদ্ধতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তানভীর হাসান। তিনি বলেন, ‘ওয়েবসাইটে শিক্ষার্থীদের কাজে আসার মতো তেমন কিছু নেই। ফর্ম পূরণ আর অ্যাকাডেমিক স্ট্যাটাস দেখা ছাড়া খুব বেশি কিছু করা যায় না। অথচ প্রত্যেক বিভাগের কোর্সের বিস্তারিত বিবরণ, শিক্ষকদের তথ্য, বিভাগের ইতিহাস, বিশিষ্ট প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ক্লাব সম্পর্কিত আলাদা সেকশন থাকা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে কলেজের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আহ্বায়ক অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন বলেন, কলেজের ওয়েবসাইটে আমাদের অসম্পূর্ণতা রয়ে গেছে, এগুলো আমরা উন্নত করার চেষ্টা করছি। কমিটির অন্য যে সদস্যরা রয়েছেন তাদের সাথে নিয়মিত বসছি। আইসিটি এবং ওয়েবসাইটের বিষয়ে সময়ের সাথে কীভাবে তাল মেলাতে পারি সেই চেষ্টা আমরা প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছি। কলেজ প্রশাসন যদি লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে পারে। তাহলে আমরা ইনশাল্লাহ লাইব্রেরির বিষয়ে চিন্তা করব।   

তথ্য হালনাগাদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কলেজের নেটওয়ার্ক সব সময় পর্যাপ্ত থাকে না। আমরা চেষ্টা করি যেকোনো নোটিশ তাৎক্ষণিক ছাত্রদের কাছে পৌঁছানোর জন্য। তবে যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে আমাদের সেখানে কিছু করার থাকে না। 

তিনি আরও বলেন, ঢাকা কলেজের মতো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ই-লাইব্রেরি থাকাটা স্বাভাবিক প্রত্যাশা। তবে এতদিন এ বিষয়টি উপেক্ষিত ছিল, এখন সময় এসেছে এ নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবার। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় হতে চাই। তাই ই-আর্কাইভ চালুর পরিকল্পনা আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি। তবে সরকারি কার্যক্রমে সব কিছু একসাথে করা সম্ভব হয় না—বাজেট ও অন্যান্য বাস্তব সীমাবদ্ধতা থাকে। এসব মাথায় রেখেই ধাপে ধাপে আমরা এ বিষয়গুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করব

কলেজের ওয়েবসাইটে তথ্য হালনাগাদের দায়িত্ব পালন করেন সহকারী প্রোগ্রামার ইয়াসিন তানভীর। পর্যাপ্ত তথ্য না থাকা ও তথ্য হালনাগাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence