‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে এসেছো, এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে’

জবি রেজিস্ট্রার ও ভুক্তভোগী
জবি রেজিস্ট্রার ও ভুক্তভোগী  © টিডিসি সম্পাদিত

‘‘বের হয়ে যাও! ওরে বের করে দাও! পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনো পড়তে এসেছো, এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে’’— এভাবেই এক শিক্ষার্থীর সাথে দুর্ব্যবহার করে রুম থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মো: গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে। দুর্ব্যবহারের শিকার হওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম ইভান তাহসীব, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্টের সভাপতি। 

গতকাল মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে গত তিন মাসে একাধিক সাইকেল চুরির ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে যায় ইভান তাহসীবসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এসব চুরির ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ নিয়ে যাওয়ার পরই তিনি এর সমাধান না করে উল্টো অভিযোগকারীদের সাথে উত্তেজিত হয়ে তাকে রুম থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার একটি অডিও ক্লিপ হাতে এসেছে প্রতিবেদকের কাছে। অডিও ক্লিপে শোনা যায়, শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে রেজিস্ট্রার ড. গিয়াস উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের মালামালের নিরাপত্তা দিতে পারবো না, মালামাল শিক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বে রাখতে হবে। শিক্ষার্থীরা কি খাবে, কোথায় থাকবে? এই দায়িত্ব প্রশাসনের না। শিক্ষার্থীদের কিছু হলে এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর দায়ভার নিতে পারবে না। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, গেট আউট। কর্মচারীকে ইশারা করে বলেন, ওকে (ইভান) বের করে দাও। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনো পড়তে আসো, এলাকায় পড়লেই তো পারতে। 

এ বিষয়ে ইভান তাহসীব বলেন, আমার এক ছোট ভাইয়ের সাইকেল চুরি নিয়ে অভিযোগ জানাতে রেজিস্ট্রার দপ্তরে যাই। আমি প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যারেজ থেকে সাইকেল  চুরির ঘটনা বললে, রেজিস্ট্রার উত্তেজিত হয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গ্যারেজ নেই। শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের আন্ডার গ্রাউন্ডের মালামালের নিরাপত্তার দায়িত্ব ওনি নিতে পারবে না বলে জানান। শিক্ষার্থীরা টিউশনির জমানো টাকায় সাইকেল কিনে, সেই সাইকেল নিয়ে টিউশনি করে।

ওনি যদি গ্যারেজের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে গ্যারেজ বন্ধ করে দিক, অথবা সাইনবোর্ড লাগিয়ে ঘোষণা করে দিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন মালামালের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় নিতে পারবে না। এক পর্যায়ে ওনি আমাকে তার কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মিটিং আছেন এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে এই প্রতিবেদকের ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার বিভিন্ন ফোন নাম্বার দিয়ে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে, আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের নিউজরুম থেকে জবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মো: গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ঘটনার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের তথ্য কে দিয়েছে জিজ্ঞাসা করেন (উল্টো প্রশ্ন করে)? এসময় আগামীকালকে তার অফিসে দেখা করতে বলেন এবং বিস্তারিত জানাবে বলে জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ