প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে জবিতে ব্যঙ্গাত্মক প্রদর্শনী বিতর্ক

জবিতে ব্যঙ্গাত্মক প্রদর্শনী বিতর্ক
জবিতে ব্যঙ্গাত্মক প্রদর্শনী বিতর্ক  © টিডিসি ফটো

একের পর এক শিক্ষার্থীদের ওপর রাজনৈতিক হামলার ঘটনা ঘটলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে—এই অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘এই সংসদ মনে করে, জবি প্রশাসন মেরুদণ্ডহীন নয় বরং অথর্ব’ শিরোনামে একটি প্রদর্শনী বিতর্কের আয়োজন করে।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের নিচে অনুষ্ঠিত এ বিতর্কে বক্তারা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা, পক্ষপাতমূলক আচরণ ও ন্যায়বিচারের অভাব নিয়ে সরব হন। বিতার্কিকরা জবি প্রশাসনের দুর্বলতা ও ব্যর্থতার বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেন।  

প্রশাসনের অবহেলার আরেকটি দিক তুলে ধরে বিতার্কিক সাদিয়া আফরোজ মীম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীহলে শিক্ষার্থীরা নানা সংকটে ভুগছে। ইন্টারনেট সংযোগের দুর্বলতার কারণে ছাত্রীরা অনলাইন রিসোর্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ প্রশাসন সমস্যার সমাধান না করে শুধু আশ্বাস দিয়েই সময় পার করছে। এটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার শামিল।’  

আরো পড়ুন: জবির ৯৪  শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা

বিরোধী দলীয় নেতার ভূমিকায় থাকা শিক্ষার্থী নাঈম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বিগত সময়গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মেরুদণ্ডহীন ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। একের পর এক শিক্ষার্থীদের ওপর রাজনৈতিক হামলা হচ্ছে, অথচ প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবিতে আন্দোলন করলেও কোনো ন্যায়বিচার মেলেনি, অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সমস্যায় কর্ণপাতই করে না, বরং নীরবতা পালন করে যাচ্ছে।’

আয়োজনের বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত হাসান সাকিব বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে অনেক কিছু প্রত্যাশা করেছিল। দীর্ঘ ১৯ বছরের বঞ্চনার পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন ভিসি নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল।

কিন্তু বর্তমান প্রশাসন এখনো দৃশ্যমান কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারেনি, যা তাদের অবহেলা ও ব্যর্থতারই প্রমাণ। শিক্ষার্থীরা আশা করেছিল, নতুন প্রশাসন তাদের সমস্যাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।’ 

দর্শক সারিতে থাকা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাহীন মিয়া বলেন, ‘আজকের বিতর্ক দারুণ উপভোগ্য ছিল। এটি ছিলা মূলত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলা আর দায়সারা কাজের বিরুদ্ধে একটি প্রতীকী প্রতিবাদ।’

বিতর্কের স্পিকারের ভূমিকায় থাকা আম্মার বিন আসাদ বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে ও পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একের পর এক ন্যায্য দাবির বিষয়ে নিষ্ক্রিয় থাকার বিষয়টি আজকের বিতর্কে উঠে এসেছে।

শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট ভাষায় তাদের ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে। জবি প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং পক্ষপাতমূলক আচরণ শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার পথে এক বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

এই বিতর্কের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের ন্যায্য ও সাহসী ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। তারা মনে করে, প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিবাদ ও আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।


সর্বশেষ সংবাদ