ক্লাসরুমের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের প্রশাসন ভবন ঘেরাও
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৪ PM , আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৪ PM

বরাদ্দকৃত ক্লাসরুম বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রশাসন ভবন ঘেরাও করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা৷ পরে দাবি আদায়ে তারা প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে।
একই দাবিতে গতকাল সকাল থেকেও দাবি আদায়ে আন্দোলন করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। আজ দ্বিতীয় দিনের মতো তাদের আন্দোলন চলছে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘শিক্ষা সবার অধিকার, স্পোর্টস সাইন্স কেন বঞ্চিত বারবার’; ‘কোথায় পড়ব, কোথায় শিখব? ক্লাসরুম চাই, ক্লাসরুম চাই’; ‘সবার নাই ক্লাসরুম, ইবি প্রশাসন দিচ্ছে ঘুম’; ‘আমাদের অধিকার ক্লাসরুম দিতে হবে’; ‘অন্য বিভাগ স্বর্গে, স্পোর্টস সায়েন্স কেন মর্গে’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ‘প্রশাসনের টালবাহানা, মানিবা মানব না’; ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস; আমাদের সংগ্রাম চলবেই চলবে’; ‘আমার নাই ক্লাসরুম, প্রশাসন দিচ্ছে ঘুম’; অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘বৈষম্যর কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
আরও পড়ুন: মুসল্লিদের কথা ভেবে কর্মসূচি শিথিল করলেন তিতুমীর শিক্ষার্থীরা
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জিমনেশিয়ামে ক্লাস করলেও বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শারীরিক শিক্ষা বিভাগে ক্লাসরুমের সংকট দেখা দিয়েছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ অনুষদ ভবন থেকে ওই ভবনে স্থানান্তরিত হলে অনুষদ ভবনের ক্লাসরুমগুলো শারীরিক শিক্ষা বিভাগকে বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল।
গত ৮ অক্টোবর অনুষদ ভবনের তৃতীয় তলার ৩০১, ৩০২, ৩৩৭, ৩৩৭(ক), ৩৩৮, ৩৩৯, ৩৪০, ৩৪২, ৩৪৩, ৩৪৪ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয় শারীরিক শিক্ষা বিভাগকে। এ ছাড়া ফোকলোর স্টাডিজ কর্তৃক ব্যবহৃত রুমগুলোও শারীরিক শিক্ষার অধীন থাকবে বলে জানান কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন। কিন্তু বরাদ্দকৃত ক্লাসরুম আর বুঝে পায়নি শারীরিক শিক্ষা বিভাগ।
আরও পড়ুন: আবারও বাঁশ দিয়ে সড়ক আটকে দিলেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘গতকাল আমরা আন্দোলনে নেমেছিলাম। এরপর প্রশাসনের আশ্বাসে আমরা গতকালের মতো চলে গেলেও পরবর্তী সময়ে আমরা কোনো সমাধান পাইনি। ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ হয়নি। তাই আমরা আজকেও মানববন্ধন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের বরাদ্দকৃত শ্রেণিকক্ষ আজকের মধ্যেই ফিরিয়ে দিতে হবে। নইলে আমাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে।’
শিক্ষার্থী আসিফ বলেন, ‘আমরা স্পোর্টস সায়েন্সের ৩টি ব্যাচ আমাদের কোনো ক্লাসরুম নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ভবনে জায়গা না পেয়ে জিমনেশিয়ামে আমাদের ক্লাস করতে দেওয়া হয়। তিন মাস আগে অনুষদ ভবনে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ব্যবহৃত ১০ টি ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের আরও ৮টি শিক্ষক ও ক্লাসরুম বরাদ্দ আছে। কিন্তু প্রশাসনের টালবাহানায় আমাদের বিভাগকে রুমগুলো হস্তান্তর করছে না। এ জন্য আজ আমরা এখানে আন্দোলন করছি। আমরা আমাদের বরাদ্দকৃত ক্লাসরুমে ক্লাস করতে চাই।’
আরও পড়ুন: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন শুরু
এর আগে বিভিন্ন সময় ক্লাসরুমের দাবিতে আন্দোলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে আমরণ অনশন পর্যন্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা৷ এ ছাড়া একই দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে আন্দোলন করেছে সমাজকল্যাণ বিভাগ।