নতুন বছরে কেমন বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে চান বাউবি শিক্ষার্থীরা

বাউবি শিক্ষার্থী
বাউবি শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

শেষ হতে চলেছে ২০২৪ সাল। দরজায় কড়া নাড়ছে নতুন বছরের পদধ্বনি। নতুন বছরে আসে নতুন স্বপ্ন, নতুন প্রত্যাশা। ২৪ এর জুলাই বিপ্লব এক নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা দাবি-দাওয়া তুলছে, ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে চাচ্ছে।

বিদ্যার্থী তালিকাভুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। সারা দেশ জুড়ে যার শিক্ষা ব্যবস্থা বিস্তৃত। যেখানে এসএসসি থেকে পিএইচডি পর্যন্ত পড়াশোনা হয়। 

নতুন বছরে কেমন দেখতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় এই ব্যাপারে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) বিভিন্ন প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের চিন্তা-ভাবনা ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধি মো. লিটন হোসেন।

আইন প্রোগ্রামের সেমিস্টার ফি অবশ্যই কমাতে হবে 

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রোগ্রামে প্রতি সেমিস্টারে প্রায় পনেরো হাজার টাকা নেওয়া হয়। অনার্স সম্পূর্ণ করতে প্রায় এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা লাগে। আইন প্রোগ্রামের এই অতিরিক্ত সেমিস্টার ফি এর জন্য আমি এবং আমার সহপাঠীরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। অতিরিক্ত সেমিস্টার ফি আমার পরিবারে অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে। অনেক সহপাঠী বন্ধুদের পড়াশোনা বন্ধের পথে। কারণ তারা সেমিস্টার ফি জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে। সেমিস্টার ফি নিয়ে দুশ্চিন্তায় সহপাঠী বন্ধুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলছে, পড়াশোনার অন্যান্য খরচ মেটানো কঠিন হচ্ছে। যেমন: বই কেনা, বাসা ভাড়া। অতিরিক্ত সেমিস্টার ফি এর জন্য অনেকে সময়মতো সেমিস্টার ফি জমা দিতে পারছে না। যার কারণে তারা সেমিস্টার থেকে পিছিয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় আমরাও প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই খানে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত সেমিস্টার ফি থাকা অযৌক্তিক। জুলাই বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই; অনতিবিলম্বে আইন প্রোগ্রামের অতিরিক্ত সেমিস্টার ফি কমানোর ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন।

তামান্না আক্তার
আইন প্রোগ্রাম ১০ম ব্যাচ

শিক্ষার্থী বান্ধব আধুনিক বাউবি চাই

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা প্রায়ই শিক্ষার্থী হয়রানির কথা শুনতে পাই। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রায়ই শিক্ষার্থীদেরকে নানা ভাবে হয়রানি করে। যেমন: সময় মত সার্টিফিকেট প্রদানে বিলম্ব, দুর্ব্যবহার করা, তথ্য প্রদানে অসহযোগিতা করা ইত্যাদি। আমরা চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বান্ধব হয়ে উঠুক। সকল শিক্ষার্থী হয়রানির অবসান ঘটুক। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ৩৫ একরের বিশাল জায়গা রয়েছে। অথচ এত বড় ক্যাম্পাসে এখন পর্যন্ত কোন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয় নি। আমরা নতুন বছরেই প্রধান ক্যাম্পাসে অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ এবং আইন, সিএসই এর মতো প্রোগ্রামগুলোর ক্লাস-পরীক্ষা মূল ক্যাম্পাসে দেখতে চাই।

ফরহাদ হোসেন 
ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন প্রোগ্রাম ১ম ব্যাচ

গবেষণা এবং ল্যাবের উপর জোর গুরুত্ব দেখতে চাই

আমাদের সিএসই প্রোগ্রামের ২টা স্টাডি সেন্টার রয়েছে। একটা ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং আরেকটা ডুয়েট এ. আমরা যারা ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্র ক্যাম্পাসে সিএসই তে অধ্যয়ন করি; সেখানে নানা রকম সমস্যায় জর্জরিত। বিশেষ করে ক্লাস রুমে জায়গা সংকীর্ণতা রয়েছে। ল্যাবে শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত কম্পিউটার নেই, সিট সংকট রয়েছে। সেশনজট, গেস্ট টিচারদের গাফিলতি, মাত্রাতিরিক্ত সেমিস্টার ফি, শিক্ষার্থীদের কোনো কম্পিউটার ক্লাব নেই এই রকম বহুবিধ সমস্যা রয়েছে। আমরা আশা করি; আমাদের অ্যাকাডেমিক যে সব সমস্যা আছে অনতিবিলম্বে তা সমাধান করা হোক।

আফরোজা খানম প্রিয়া
৯ম ব্যাচ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম (সিএসই)

সেশনজট মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চাই

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভয়াবহ সমস্যা হচ্ছে সেশনজট। যেখানে প্রতিটা প্রোগ্রামে নির্দিষ্ট সময়ে কখনোই সেমিস্টার শেষ হয় না। যা আমাদের শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত করে এবং হতাশা নিয়ে আসে। নতুন বছরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা করি; যেন আমরা সেশনজট মুক্ত অ্যাকাডেমিক জীবন পাই। সোজা কথা; আমরা আর কোন সেশনজট দেখতে চাই না।

মোশরেকুল ইসলাম মন্ডল 
আইন প্রোগ্রাম 


সর্বশেষ সংবাদ