জামিনে মুক্ত ইবির ৫ শিক্ষার্থী, শাস্তির প্রশ্নে জটিল সমীকরণ!
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ PM , আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৬ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলে র্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত ৯ জনের মধ্যে আটককৃত ৫ জন জামিনে মুক্তি দিয়েছে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত। নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে আটকের পরেরদিন ই জামিন পেলেন তারা। এতে মামলা আদালতে বিচারাধীন হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে বাধা নেই তাদের। ফলে র্যাগিংয়ের শাস্তির প্রশ্ন আটকে আছে জটিল সমীকরণে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেল ৪ টার দিকে তাদের জামিনে মুক্তি দেয়া হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জামিনে মুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন মো. সাব্বির হোসেন (২১), শরিফ শেখ শেহান (২১), শরিফুল ইসলাম লিমন (২১), সুকুমার কান্ত বড়ুয়া (২০) ও সঞ্চয় বড়ুয়া (২০)।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম জানান, আটক ৫ জনকে জামিনে মুক্ত করা হয়েছে। বাকিরা অনুপস্থিত থাকায় হয়নি। আগামীকাল তাদের শুনানির তারিখ জানা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি সম্পর্কে বলেন, যেহেতু একবার শাস্তি হয়ে যাচ্ছে, সংবিধান ও সিপিসি অনুযায়ী পুনরায় শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নাই।
আরও পড়ুন: র্যাগিংয়ের অভিযোগে ইবির ৫ শিক্ষার্থী কারাগারে
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি সঞ্জয় সরকার বলেন, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শিক্ষার্থীদের জামিন দেয়া হয়েছে বলে জেনেছি। এখন তো স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। বিষয়টি যেহেতু এখন আদালতের বিচারাধীন তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। আইনি বিষয়ে আমার এত ধারণাও নেই। তবে ক্লাস পরীক্ষা নিয়ে তাদের কোনো সমস্যা হবে না। যেহেতু তারা জামিনে আছে, তাই ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে কোনো বাধা নেই।
দোবারা শাস্তি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান বলেন, র্যাগিং একটি 'ক্রিমিনাল অফেন্স' হিসেবে গণ্য হয়। সেক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলা দায়ের হলে আইনি প্রক্রিয়াতেই কার্যক্রম চলে। ইতঃপূর্বে র্যাগিংয়ের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোড অফ কন্ডাক্ট অনুযায়ী শাস্তির বিধান করলেও এবার যেহেতু ঘটনা ভিন্ন তাই আগে নিশ্চিত হতে হবে যে তদন্ত কমিটি আদালতে বিচারাধীন বিষয় সম্পর্কে অবগত কিনা এবং তারা তদন্ত কার্যক্রম চলমান রেখেছে কিনা। এখন একটি অপরাধের কারণে একজন দোষী সাব্যস্ত হলেও তাকে একাধিকবার শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নেই।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আকতার হোসেন বলেন, বাহিরে কী হচ্ছে সেটা দেখার বিষয় না বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইনে তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের শাস্তি হবে। যদি আইনে এরকম বাঁধা দেয় তাহলে তদন্ত কমিটি আদালতের সহায়ক হতে পারে বা আদালতের রায় আমাদের সহায়ক হতে পারে যা পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে হবে।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলে নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. তারেক। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় অভিযুক্ত ৯ জনের বিরুদ্ধে ইবি থানায় এই মামলা দায়ের করেন তিনি। এর প্রেক্ষিতে পূর্বেই পুলিশের হেফাজতে থাকা ৫ শিক্ষার্থীকে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চালান দেওয়া হয়। দণ্ডবিধির ১৪৩, ৩২৩, ৩৪১ ও ৫০৬ নং ধারা অনুযায়ী মামলা হয়েছে বলে এজাহার সূত্রে জানা গেছে।