জবির আবাসিক সংকট নিরসনে ‘ভাড়া বাসা’য় হল করার নির্দেশনা

জবির আবাসিক সংকট নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর নির্দেশনা
জবির আবাসিক সংকট নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর নির্দেশনা  © টিডিসি ফটো

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক সংকট সাময়িক নিরসনের লক্ষ্যে সুবিধাজনক স্থানে বাসা ভাড়া করে ছাত্র/ছাত্রী হল হিসেবে ব্যবহারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে লিখিত আকারে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ ১৪ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকালে প্রকাশিত "জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন" শীর্ষক প্রকল্পের চলমান কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পর্যালোচনা সভার কার্যবিবরণীতে একাধিক সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সিদ্ধান্ত গুলোর মধ্যে আরও উল্লেখ করা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে গৃহীত এ প্রকল্পের আওতায় চলমান ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসন, ঢাকার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। 

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে উপযুক্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করবে এবং তাকে এ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব প্রদানের প্রস্তাব দ্রুত মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে হবে। প্রকল্পের অবশিষ্ট যে-সকল কাজ এখনও আরম্ভ হয়নি অথবা দরপত্র অনুমোদন করা হয়নি সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে "অর্পিত ক্রয় কাজ" হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

মন্ত্রণালয় আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ২য় পর্যায়ের প্রকল্পের কাজ "অর্পিত ক্রয় কাজ" হিসেবে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করতে পারে  এবং প্রস্তাবিত ২য় পর্যায় প্রকল্পের নাম এবং মৌলিক অঙ্গ চিহ্নিত করে প্রকল্পটির সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দবিহীন তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য সংক্ষিপ্ত প্রকল্প ধারণাপত্র বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে প্রেরণ করবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান প্রকল্পটির আওতায় ইতোমধ্যে সম্পাদিত কাজে দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিচালন বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে দ্রুত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে অর্থ বিভাগে প্রেরণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অর্থ বিভাগের সাথে সার্বক্ষণিক নিবিড় যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে স্থাপনা/হোস্টেল/শিক্ষা সুবিধা নির্মাণে কোন ব্যক্তি/ফিলানথ্রপিক অর্গানাইজেশন (Philaontrophic Organization) দেশীয় বৈদেশিক সংস্থা হতে অনুদান/স্পন্সর পাওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আওতায় বাস্তবায়নাধীন 'Higher Education Acceleration and Transformation (HEAT)' শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন কার্যক্রমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এখন আমরা সব কিছু বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাবো। আমরা তো আগে থেকেই এসব নিয়ে কাজ করছিলাম। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে এখন ব্যাপার গুলো আমাদের জন্য আরও সহজ হয়ে গিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব হয় আমরা এসব কাজ শেষ করে শিক্ষার্থীদের সব সংকট দূর করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আজকেও ইউজিসিতে গিয়েছিলাম। পিডি নিয়োগের ব্যাপারে আবেদন করা আছে। ইউজিসি থেকে সেটি অনুমোদন হয়ে আসলেই নতুন পিডি নিয়োগ হয়ে যাবে দ্রুত।’ 

দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও নতুন ক্যাম্পাস নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি একটি প্রজ্ঞাপন হওয়া প্রকল্পের নাম। চাইলেই আমরা এখন এগুলোতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বলতে পারিনা। পরবর্তী সকল নতুন প্রকল্পে যাতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস উল্লেখ করা হয় সেটি নিশ্চিত করবো।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় লিখিত দেওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, ‘আমাদের প্রথম বিজয় হয়েছে। এখন আমরা চাই কাজগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। আমরা কাজের অগ্রগতির দিকে নজর রাখবো এবং জবিয়ানদের অধিকার নিশ্চিত করবো।’


সর্বশেষ সংবাদ