খুবি ভিসি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন যারা

অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশিদ খান, এবং অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম
অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশিদ খান, এবং অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম  © সংগৃহীত

আওয়ামী সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ হলেও এখনো ভিসি নিয়োগ হয়নি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এ শীর্ষ পদটিতে কে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় ভিসি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির তিন অধ্যাপক।

এ তালিকায় প্রথমেই নাম আসে গণিত ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বিশ্বাসের। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে তার ২৫০টির অধিক গবেষণা প্রবন্ধ ও ৬টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের স্নাতকে ১ম শ্রেণিতে প্রথম ও ফ্যাকাল্টি প্রথম হয়ে প্রধানমন্ত্রী গোল্ড মেডেল লাভ করেন। পরে ফলিত গণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে রেকর্ড মার্ক পেয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম স্থান অর্জন করেন। তিনি ভিক্ষু শিলাচার শাস্ত্রী গোল্ড মেডেল লাভ করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি ইউরোপের বিখ্যাত ইউনিভার্সিটি অব পোর্তো, পর্তুগাল থেকে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। দেশে ও বিদেশে ১০ জন শিক্ষার্থী তার অধীনে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করছেন।

ড. বিশ্বাস বাংলাদেশ ম্যাথমেটিকাল সোসাইটির নির্বাচিত সহ-সভাপতি ছিলেন এবং তিনি বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ম্যাথমেটিকাল বায়োলজি-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত সিনেট সদস্য ছিলেন। গণিত ডিসিপ্লিনের প্রধান, সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, সহকারী হল প্রভোস্টসহ তিনি বিভিন্ন প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০২০ সালে তিনি ‘ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। দেশে-বিদেশে প্রায় ৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কী-নোট স্পিকার, অতিথি শিক্ষক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বাংলাদেশ গণিত সোসাইটি (বিএমএস), এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বাংলাদেশ (এএসবি), ইনস্টিটিউট অফ ম্যাথমেটিক্স অ্যান্ড ইটস অ্যাপ্লিকেশান ইউকে (আইএমএফ), ইউরোপিয়ান ম্যাথমেটিকাল সোসাইটি (ইএমএস) এর মতো বেশ কয়েকটি পেশাদার সোসাইটি এবং গবেষণা সংস্থার সদস্য। এছাড়াও আইইওএম সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক প্রদত্ত ‘আউটস্ট্যান্ডিং রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ পেয়েছেন এবং পেশায় ফলিত গণিত গবেষণা ও প্রকাশনার স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার প্রাপ্ত হয়েছেন।

নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভিসি চান খুবি শিক্ষার্থী থেকে শিক্ষক ও কর্মচারীরা। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় অদম্য মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে অধ্যাপক ড. হায়দার বিশ্বাস অন্যদের থেকে এগিয়ে।

আরও পড়ুন: আরও ১২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ হচ্ছে

আলোচনার আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশিদ খান। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে ১৩০টির অধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেন যেগুলোর সাইটেশন সংখ্যা ১১ হাজারের ওপরে। দীর্ঘ ৩২ বছরের শিক্ষকতা ও গবেষণা জীবনে ড. খান নোবলেজয়ী গবেষকদের সাথেও কাজ করেন। 

২৬ মে ২০১২ তারিখে ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে তার লেখা ‘সাদা ওয়াইন ও টেকসই গণতন্ত্র’ কলামটি সেসময় ড. ইউনূসের শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া ফেলে। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। পরে জাপান সরকারের মনবুশো বৃত্তিতে সাগা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি এবং টোকিও ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে প্রথম ও সাগা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় পোস্ট ডক্টরাল সম্পন্ন করেন। 

তিনি সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি, হলের প্রভোস্ট, ডিন, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রধান ও রিসার্চ সেলের ডিরেক্টরসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। গবেষক হিসেবে তিনি জাপানের হাই এনার্জি এক্সেলেটর রিসার্চ অর্গানাইজেশনে (কেইকে) বেল কোলাবরেটর এবং ইতালির আবদুস সালাম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরিটিক্যাল ফিজিক্স (আইসটিপি)-এর রেগুলার এসোসিয়েট  ছিলেন। 

নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমের নামও উপাচার্য হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগ থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের প্রধান, ডিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং ইনিস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেলের পরিচালকসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। 

তিনি হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট (হেকেপ) এর অধীনে একটি গবেষণা প্রকল্প সম্পন্ন করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংক পরিচালিত কলেজ এডুকেশন ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টে (সিইডিপি) কনসালটেন্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন। গবেষণার পাশাপাশি আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে তিনি কনসালটেন্সি সেবা দিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence