কেমন উপাচার্য চায় খুবি শিক্ষার্থীরা

কেমন উপাচার্য চায় খুবি শিক্ষার্থীরা
কেমন উপাচার্য চায় খুবি শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি শূন্য হয়ে পড়ে যার দরুন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চাহিদা মোতাবেক তারা কেমন ভিসি প্রত্যাশা করেন সেটা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চান এমন একজন উপাচার্য যিনি- শিক্ষার্থী বান্ধব হবেন, উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও চাহিদাগুলো সমাধানে কাজ করবেন। তারা চান এমন একজন উপাচার্য যিনি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম পরিচালনায় উৎসাহিত করবেন এবং তাদের মতামতকে প্রাধান্য দিবেন। 

শিক্ষার্থীরা চান তাদের উপাচার্য শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করবেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন বিশ্বমানের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, পাঠ্যক্রম আধুনিকীকরণ করা হয় এবং গবেষণা কার্যক্রমকে আরও সক্রিয় করা হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চান তাদের বিশ্ববিদ্যালয় দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকায় স্থান পাবে, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদান করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি হয়। শিক্ষার্থীরা চান তাদের উপাচার্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন নিশ্চিত করবেন, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরনের দুর্নীতি না হয় এবং সব কাজ স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেমন উপাচার্য চান এ প্রসঙ্গে স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান মুন্সি বলেন, আমি এমন উপাচার্য চাই যিনি সত্যিকার অর্থে সকলের শিক্ষক হবেন, যার কার্যক্রম দেখে বোঝা যাবে না তিনি কোন ডিসিপ্লিনের বা কোন স্কুলের। আমি চাই এমন শিক্ষক ভিসি হোক যার রাজনৈতিক নয় বরং অ্যাকাডেমিক এবং রিসার্চে সম্পৃক্ততা বেশি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার যে মান এবং যে আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা তা বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো। তা সত্ত্বেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশব্যাপী খুব কমই পরিচিত পেয়েছে এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের কথা কম মানুষই জানে। 

তিনি আরও বলেন, আমি অবশ্যই চাই নতুন ভিসি তার ব্যক্তিত্ব এবং নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশ এবং বিশ্বমঞ্চে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে পারবেন। পাশাপাশি বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে তাদের সান্নিধ্য দিতে পারবেন৷ বিগত ২-৩ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স হতে দেখেছি। আশা করি সেই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং অবশ্যই তিনি খেয়াল রাখবেন এক্ষেত্রে সকল স্কুল এবং ডিসিপ্লিন যাতে সমান সুবিধা পায়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রাজনীতিমুক্ত হলেও শিক্ষক রাজনীতি এখনও চলমান। শিক্ষক রাজনীতির সামনে শিক্ষার্থীদের অসহায়ত্ব নিজের চোখে দেখেছি এবং অনেক শিক্ষকের লাঞ্চনার কথাও শুনেছি। আমি চাই এমন ব্যক্তি ভিসি হোক যার লেজুড়বৃত্তিক শিক্ষক রাজনীতি বন্ধের সৎসাহস আছে।

আরও পড়ুনঃ প্রথম বারের মতো খুবি থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ

ইতিহাস ও ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার লাবনী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি বুদ্ধিবৃত্তিক জায়গা যেখানে একটি জাতির মেধার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটানোর সুযোগ থাকে। এই বহু বৃত্তিক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা, উদ্ভাবন এবং নৈতিকতার বিকাশ ঘটে। আর এতে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন একজন ভাইস-চ্যান্সেলর বা ভিসি। প্রসঙ্গ যখন নিরপেক্ষ ও রাজনীতিমুক্ত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ নিয়ে তখন অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে হতে হবে ব্যতিক্রমী।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা,এবং আন্তর্জাতিক মানোন্নয়নে কাজ করা। শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক এবং মানসিক সাপোর্ট সিস্টেম জোরদার করার মাধ্যমে শিক্ষার মান নমনীয় করতে সাহায্য করা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এমন একজন দক্ষ শিক্ষাগত ও প্রশাসনিক ভিসি চাই।

ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী হিজবুল্লাহ তামিম বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মাধ্যমে আমরা আজ নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করেছি। আন্দোলনকারী ছাত্র জনতা এখন দুর্নীতিমুক্ত এবং জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা, এমন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চাই যেখানে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বজায় থাকবে, এবং যোগ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত হবে। ভবিষ্যতে আমরা খুবিতে এমন একজন উপাচার্য চাই, যিনি কখনো ফ্যাসিস্ট মতাদর্শের সাথে যুক্ত ছিলেন না এবং কোনোদিনও এই ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে আপস করেননি। তিনি একটি সমৃদ্ধ অ্যাকাডেমিক প্রোফাইল এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দীর্ঘ ইতিহাস নিয়ে আসবেন। তার আশেপাশে থাকবেন উচ্চতর ডিগ্রিধারী, দক্ষ গবেষক এবং সৎ ও নিষ্ঠাবান শিক্ষকরা, যারা কখনো দুর্নীতি বা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না এবং ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কখনো আপস করেননি।

পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, আমি আমার ক্যাম্পাসে ভিসি হিসেবে এমন একজন মানুষকে চাই যে কিনা প্রশাসনিক এবং অ্যাকাডেমিক দুই দিকেই পারদর্শী।যদি আমরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকাই কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ভিসি স্যারের পাবলিকেশন এবং সাইটেশন অনেক বেশি হওয়াতে অনেক উল্লাস প্রকাশ করছে, কিন্তু একজন ভিসি স্যারকে আমরা শুধু গবেষণা দিয়েই মাপতে পারি না তাকে একজন নেতৃত্ব গুন সম্পন্ন লিডারও হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ সচল রাখতে সদা তৎপর থাকবে এবং জবাবদিহি মূলক প্রশাসনিক চেইন তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence