প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতেই কুবি শিক্ষার্থীদের পেটাচ্ছে পুলিশ

  © টিডিসি ফটো

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতি কোটা সংস্কারপন্থি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে পুলিশ। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত এবং প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।

এদিকে সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত শিক্ষার্থীদের হামলার ভিডিও করছেন এমন একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে ভিডিও করেছিলেন আজকের পত্রিকার কুবি প্রতিবেদক আতিকুর রহমান। তিনি জানান, আমার সামনে ছিলেন (সাদা শার্ট গায়ে) কুবির সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত। ছবিতে উনাকে দেখা যাচ্ছিল, ফলে আমার শরীর দেখা যাচ্ছিল না। তবে শুধু আমার হাত দেখা যাচ্ছিল। তাই হয়তো ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশের এ হামলায় ইন্ধন ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, এদিন বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকাল সোয়া তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার উদ্দেশ্যে বের হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও পুলিশসহ প্রায় ২০ অধিক আহত হয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশ ও ডিবির প্রায় শতাধিক সদস্য শিক্ষার্থীদের বাঁধা দিতে গেলে প্রথমে ধস্তাধস্তি হয়। এরপর আবাসিক হল ও মেসের প্রায় সাত-আটশ শিক্ষার্থী এসে যুক্ত হয়ে পুলিশের বাঁধা অতিক্রম করে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে।

এরপর শর্টগান দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলির পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। যা কিছুক্ষণের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় পুলিশকে নিভৃত না করে তখনও নীরব ভূমিকা পালন করেন সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত এবং প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী। 

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর অমিত দত্তের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি দীর্ঘক্ষণ চুপ থেকে ফোন কেটে দেন। পরে আবারও কল করা হলে তিনি কল কেটে দেন।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের উপর হামলার পর প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। পরে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পায়ে হেঁটে কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোডে অবস্থান নেন তারা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসন এবং প্রক্টরের ইন্ধনের কারণেই পুলিশ ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করার সাহস পেয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও প্রক্টরের অপসারণ দাবি করেন। 

আন্দোলনে লাবিবা ইসলাম বলেন, আমরা এখন থেকে প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম। পাশাপাশি প্রক্টরের অপসারণ চাই।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, এখানে আমার কোন ইন্ধন নেই। হামলার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমার কনসার্নেও ছিল না।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ সার্কেলের অতিরিক্ত এএসপি এমরানুল হক মারুফ বলেন, প্রতিদিন এভাবে রাস্তা ব্লক করে রাখা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। তাই আমরা আজ শিক্ষার্থীদের বাঁধা দিতে এখানে এসেছি। শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ বিষয়ে আমরা পরে ব্যবস্থা নেবো।

 

সর্বশেষ সংবাদ