‘আমি ইবির ছাত্র, বাবা ডেপুটি রেজিস্ট্রার’ বলে সাবেক ছাত্রীকে হেনস্তা

অভিযুক্ত ইবি শিক্ষার্থী
অভিযুক্ত ইবি শিক্ষার্থী  © ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক ছাত্রী ও তার স্বামীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালটির বর্তমান এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। গত ১৫ জানুয়ারি দুপুর একটার দিকে ঝিনাইদহ শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড (ওয়াপদা) সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্তের বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।

গতকাল সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। ঘটনার সময় ওই ছাত্রীকে তুই তুকারি, অকথ্য গালিগালাজ, হুমকি দেন এবং টাকা দাবি করেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী।

ভুক্তভোগী আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে স্নাতকে অধ্যয়নরত ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন নিলয়। তার বাবা হারুন-উর রশিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্যপ্রযুক্তি বিভাগে উপ-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ ভুক্তভোগী বলেন, স্বামীসহ প্রাইভেট কারে যশোর থেকে শেখপাড়া যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ঝিনাইদহের ওয়াপদা নামক স্থানে গাড়ি ঘোরানোর সময় অপর দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা অভিযুক্ত নিলয়ের বাইকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হওয়ার উপক্রম হয়। এসময় বাইকের পেছনে অভিযুক্তের মেয়ে বন্ধু বসা ছিল। তখন অভিযুক্ত ছাত্র তার বাইকটি ভুক্তভোগীর গাড়ির সামনে নিয়ে দাঁড় করান এবং বাইক থেকে নেমে প্রাইভেট কারের দরজা খুলে চাবি নিয়ে নেন। এছাড়া ভুক্তভোগীদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি ও গালি-গালাজ শুরু করেন অভিযুক্ত। 

এমন পরিস্থিতিতে সেখানে মানুষজন জড়ো হয় এবং কারো কোন ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ায় উভয়কেই চলে যেতে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী গাড়ি নিয়ে অল্প কিছু দূর যেতেই অভিযুক্ত আবার দৌড়ে গিয়ে গাড়ির সামনের ও পাশের গ্লাসে জোরে আঘাত করে গাড়ি দাঁড় করান। এসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা পুনরায় এসে অভিযুক্তের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে বকাঝকা করে ভুক্তভোগীদের যাওয়ার পথ করে দেন।

পরবর্তীতে কিছুদূর সামনে যাওয়ার পর অভিযুক্তের কয়েকজন বন্ধু কয়েকটি বাইক দিয়ে তাদের পথ অবরোধ করেন। এসময় তারা বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেন এবং অভিযুক্তের বাইকের ক্ষতিপূরণ দাবি করে। কিছুক্ষণের মধ্য অভিযুক্ত তার মেয়ে বন্ধুকে নিয়ে নিজের বাইকে করেই সেখানে আসেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও বাবার পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘পালিয়ে যাচ্ছিস কেন? আমার বাইকের ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাবি। আমি ইবির ছাত্র। আমার বাবা ইবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার, ক্ষতিপূরণ না দিলে এখান থেকে যেতে দেব না।’

পরে নিকটস্থ একটি সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়ে বাইকের ক্ষতি হয়েছে দাবি করে ভুক্তভোগীর স্বামীর থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা নেন। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ওই ছেলের (নিলয়) বাইকে আমাদের প্রাইভেট কারের সামান্যতম আঘাত লাগেনি। আর সে এটা ওটা ক্ষতি হয়েছে বলে আমাদের থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা নেন। আমার বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক জুনিয়রের কাছে হেনস্তার শিকার হয়েছি এটা লজ্জাজনক। এ ঘটনার আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। যেন ভবিষ্যতে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন নিরপরাধ মানুষকে এমন হ্যারেজমেন্ট করতে না পারে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাখাওয়াত হোসেন নিলয় বলেন, ‘তাদের গাড়ির আঘাতে আমার বাইক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা এটা দেখার পরেও কোন প্রকার ক্ষমাপ্রার্থনা না করে চলে যাচ্ছিল। তখন আমি ওনাদের গাড়ি থামাই এবং একটু খারাপ ব্যবহার করি। আর ওই সময় তারা আমাকে টোকাই বলে গালি দিলে আমি পড়াশোনা করি এটা জানাতেই তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এবং বাবার পরিচয় বলেছিলাম।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘গতকাল অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। যেহেতু অভিযোগে কর্মকর্তার নাম সংশ্লিষ্ট রয়েছে তাই ওই ছাত্রীকে উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। সেখান দেখে  নির্দেশনে দেওয়া হলে আমরা পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’

এ বিষয়ে উপাচার্যের একান্ত সচিব (পিএস) মনিরুজ্জামান মিল্টন বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। উপাচার্য স্যার ব্যস্ত ছিলেন, তিনি ফ্রি হলে বিষয়টা অনুমোদন সাপেক্ষে প্রক্টর অফিসে পাঠানো হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence