স্মার্ট দেশে অ্যানালগই বেরোবির প্রশাসনিক কার্যক্রম

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট হওয়ার পথে অগ্রসর হলেও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) হাঁটছে ঠিক উল্টো পথে। ডিজিটাল থেকে ক্রমে অ্যানালগ হওয়ার পথে এগোচ্ছে বেরোবির কার্যক্রম। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করার যেসব প্রকল্প চালু হয়েছিল, তার বেশির ভাগই অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে আছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের অটোমেশন, গবেষণাকর্মে চৌর্যবৃত্তি রোধে প্লেজারিজম সফটওয়্যার, ই-ফাইলিং, ই-টেন্ডারিং, ক্যাম্পাস রেডিও, ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব, পার্সোনাল ফাইল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ও শিক্ষার্থীদের অনলাইন ফিস কালেকশন চালু, ফাইল ট্র্যাকিং, সেন্ট্রাল স্টোরের ই-রিকুইজিশন, ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং, এসএমএস সার্ভিস, সিসি ক্যামেরা লাগানো সহ থাম্ব অ্যাটেনডেন্স এর জন্য কাজ শুরু করেছিল তৎকালীন প্রশাসন।

জানা যায়, ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আলাদা সময়ে অন্তত ১৫টি প্রকল্পের আওতায় এসব কাজ বাস্তবায়ন শুরু হয়। দু-একটি ছাড়া প্রায় সব কার্যক্রম বাস্তবায়নও করেছিল প্রশাসন। কিন্তু ২০২১ সালের ১৪ জুন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ দায়িত্ব নেওয়ার পর মাত্র চারটি ছাড়া বাকি সব ডিজিটাল সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে চালু আছে শুধু এসএমএস সার্ভিস, সিসি ক্যামেরা, ই-টেন্ডারিং ও লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার।

ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে পরিবহন পুলের পরিচালক অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন এ সেবা বন্ধ আছে। যাদের সঙ্গে চুক্তি ছিল, তারা তথ্য দিত না, ডিভাইসগুলো ওদের কাছে ছিল। আমি আসার পর বন্ধ পেয়েছি। তবে আবার চালু করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

আরও পড়ুন: ঢাবিতে সেকেন্ড টাইম চালুর দাবিতে ভিসি ও ডিনদের স্মারকলিপি

জানা যায়, ২০২০ সালের শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ভবনে প্রায় ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে থাম্ব অ্যাটেনডেন্স মেশিন বসিয়েছিল প্রশাসন। তবে নতুন উপাচার্য আসার পর এর কার্যক্রম আর এগোয়নি। এখন প্রতিস্থাপিত অ্যাটেনডেন্স মেশিনগুলো সব ভবনে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। আবার পরীক্ষার ফল দ্রুত প্রকাশ এবং পরীক্ষা কার্যক্রম গতিশীল করতে ওই দপ্তরে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু করতে ২০১৯ সালের জুন মাসে ২৫ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজ পায় ঢাকার ‘এডু সফট কনসালট্যান্ট লিমিটেড’ নামে প্রতিষ্ঠান। ওই কাজ শেষ পর্যায়ে গেলে পরীক্ষামূলকভাবে নম্বর ইনপুট দিতে দুটি বিভাগকে অফিস আদেশও দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই অটোমেশন কাজ চালু হয়নি। অজানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ বন্ধ করে দিলে এডু সফট তাদের জামানতের টাকা ফেরত দিতে অনুরোধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সঙ্গে এরপর থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ এডু সফটের। 

সার্বিক বিষয়ে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান, এখানে প্রথমে আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করতে হবে।অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে সামনে এগোনো যাবে না। তাহলে এসব কিছুর প্রয়োজন হবে না। দুই এক বছরের মধ্যে ডি-নথির আওতায় আসবে সবকিছু। এটি এসবের আপডেট ভার্সন।’

ডিজিটালাইজেশন এসব কাজ বন্ধের  বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের অটোমেশনের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পাইলটিং শুরুর পর কার্যক্রম বন্ধ হয়। পরবর্তীতে চালু করার জন্য এডু সফটের কনসালট্যান্টের এক লোক এসেছিলেন। কিন্তু আমি চুক্তির কথা বললে তারা বলেন, এগুলো আমাদের কাছে নেই। তারা জানান, মৌখিকভাবে কাজ করতে বলা হয়েছিল। তখন আমি বলেছি, ডকুমেন্ট না পেলে কিছু করতে পারব না। এরপর তারা আর যোগাযোগ করেনি। ফাইল ট্র্যাকিং, ই-রিকুইজিশন, ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং, থাম্ব অ্যাটেনডেন্স আমি উপাচার্য হওয়ার পর বন্ধ পেয়েছি। এগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। তাই এগুলোর কার্যক্রম নেই। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরা ও ই-টেন্ডারিং বর্তমানে সচল আছে। তবে বাকিগুলো  বিষয়ে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ হরা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence