জবি কোষাধ্যক্ষ হতে বিতর্কিতদের তোড়জোড়

ট্রেজারার হতে ইচ্ছুক অধ্যাপকবৃন্দ
ট্রেজারার হতে ইচ্ছুক অধ্যাপকবৃন্দ  © ফাইল ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন আহমেদের মেয়াদ আগামী ২৬ নভেম্বর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস বাকি থাকলেও এই পদে নিয়োগ পেতে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেষ্ঠ্য কয়েকজন অধ্যাপক। এমনকি নিয়োগ পেতে ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের নানা দপ্তরে ধর্না দিচ্ছেন তারা। 

শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বারবার বিবৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের মধ্য থেকে পরবর্তী কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের দাবিও জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আইনুল ইসলাম ট্রেজারার পদপ্রত্যাশী। সম্প্রতি তাকে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক পদে পুনরায় নিয়োগ দেয়া হলে সেখান থেকে ইস্তফা নেন। ট্রেজারার পদে ‘ফাইট’ দিতেই তিনি ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদ উপেক্ষা করেছেন বলে গুঞ্জন আছে। সরকারের উচ্চপদস্থদের নজর কাড়তে টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে নিয়মিত লেখালেখিও করছেন এই শিক্ষক। সম্প্রতি তার সই করা   এক চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মধ্য থেকে ট্রেজারাত নিয়োগ দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। তবে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ আছে এই অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে। এছাড়া নির্বাচনে নিজের লোককে বিজয়ী করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি, সাংবাদিক সমিতির নির্বাচন দীর্ঘদিন বন্ধ রেখে পক্ষপাতিত্ব করার অসংখ্য অভিযোগের কারণে বারবার সমালোচিত হন এই শিক্ষক। 

রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান ট্রেজারার পদে নিয়োগ পেতে আলোচনায় আছেন। সম্প্রতি তার সই-য়ে শিক্ষক সমিতি থেকেও ট্রেজারার পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের থেকে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। তবে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে মারধরের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণের পক্ষে মত দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম একাডেমিক কাউন্সিল (বিশেষ) সভা চলাকালে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কাদেরকে মারধরের অভিযোগ উঠে। পরে অবশ্য এই আচরণের জন্য ক্ষমাও চান তিনি। এছাড়াও শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে জয়ী সাদা দলের সঙ্গে আঁতাত করার অভিযোগও রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। 

কোষাধ্যক্ষ হওয়ার দৌঁড়ে পিছিয়ে নেই শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনও। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২২ এর আগে ইশতেহার ঘোষণার সময় ‘নির্বাচিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কোনো পদ না নেওয়ার’ অঙ্গীকার করলেও তা ভঙ্গ করে ডিনের দায়িত্ব নিয়ে সমালোচিত হন অধ্যাপক আবুল হোসেন। এছাড়া এই শিক্ষকের নেতৃত্বে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কাদেরকে মারধর করার অভিযোগ আছে। পরে অবশ্যইল এই কাজের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন অধ্যাপক আবুল হোসান। 

এদিকে নীলদলের একাংশের সাবেক সভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. আশরাফুল আলম ট্রেজারার হওয়ার পদে আলোচনায় আছেন। তিনি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি, নীলদলের সাবেক সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য এই অধ্যাপক। 

তালিকায় আরেক আলোচিত নাম হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শওকত জাহাঙ্গীর। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রেজারার পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। 

জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক প্রক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদকে চার বছরের জন্য ট্রেজারার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এর মধ্যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ট্রেজারার পদে পুনরায় দায়িত্ব পেতে এই অধ্যাপকও এগিয়ে আছেন।

ট্রেজারার নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ বিষয়ে ফোনে বক্তব্য দেওয়া যাবে না। বক্তব্য নিতে হলে অফিসে আসতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence