ডেঙ্গু আতঙ্কে ববি শিক্ষার্থীরা, প্রতিরোধে উদ্যোগ নেই প্রশাসনের
- ববি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২৭ PM , আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৫৭ PM
সারাদেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু জ্বর। প্রতিদিন মারা যাচ্ছে মানুষ। সরকারি হিসেব মতে রাজধানী ঢাকার পর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল ও চট্টগ্রামে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে উদ্যোগী হবার কথা বলা হলেও এখনো উদাসীন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসন।
প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর এ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই সচেতনতার কোনো বালাই। ডেঙ্গু ঝুঁকিতে থাকা শিক্ষার্থীরা ফুঁসছে চরম ক্ষোভে। এখন পর্যন্ত কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে মশা নিধন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। গত সপ্তাহের বুধবার মাউশির নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কিন্তু আজ সোমবার পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে কোনো সচেতনতা কার্যক্রম চোখে পরে নি ডেঙ্গু প্রতিরোধে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে চোখে পরলো ডেঙ্গু ঝুঁকিতে থাকা শিক্ষার্থীদের সেবা প্রদানের অপ্রতুলতার চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়টির হলগুলোতে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী বাস করলেও কোথাও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কোনো পোস্টার নেই। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ও খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবি থাকলেও মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসে পুরো ক্যাম্পাসের কোথাও নেই কোনো উদ্যোগ। মেডিকেল সেন্টারে রয়েছে মাত্র দুটি বেড। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে শিক্ষার্থীদের দেবার জন্য সাধারণ প্যারাসিটেমল ছাড়া নেই আর কোনো ওষুধ। এসব ব্যাপার নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগ হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে ময়লা-আবর্জনার যে স্তূপ হয়েছে তাতে মশার প্রজননক্ষেত্র হিসেবে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ না নেয়ায় ডেঙ্গু সহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: আচরণ শেখানোর নামে হয়রানি, হাসপাতালে ছাত্রী
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা প্রয়োজন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে উদাসীন অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। যতটুকু জানি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ ডেঙ্গু ঝুঁকিতে থাকলেও তাদেরকে নিয়ে কেউ ভাবছে না।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে উপাচার্য ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিনের মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেন নি। মাউশি এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পেয়েছে কিনা জানতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সুপ্রভাত হালদারকে মুঠোফোনে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা দিয়েও কোনো সাড়া মেলে নি।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাইরে হলেও তাদেরকে অনুরোধ করে কয়েকবার মশক নিধনের স্প্রে করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ ডোবা - নালা এবং পানি জমে থাকার মতো জায়গা গুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আর কি কি সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেয়া যায় সে বিষয়েও ভাবছে প্রশাসন।