কলেজ ভবন ঠিকাদারের দখলে, ২ বছর বন্ধ পাঠদান
- নেত্রকোনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৩, ০২:২৫ PM , আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২৩, ০২:৩৩ PM
নেত্রকোনার মদন উপজেলার সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজের মাঠ ও স্নাতক ভবন দখলে নিয়ে দুই বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে ঠিকাদারের লোকজন। ফলে দুই বছরের বেশী সময় ধরে স্নাতকের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরাও ভুলে গেছে তাদের শ্রেণিকক্ষের কথা। অভিযোগ রয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের যোগসাজশেই মাঠ সহ স্নাতক ভবনটি দখল নিয়েছে ঠিকাদার। এতে কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম নেই বললেই চলে। ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় মদন সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজের দুটি একাডেমি ভবনের নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ছয় তলা একটি ভবনের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছেন মেসার্স তামান্না এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ১৭ আগস্ট ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ৫৪০ দিনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। অপর দিকে ৬ কোটি ৬৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ব্যয়ে আরেকটি ছয় তলা ভবন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছেন দেওয়ান আলী আকবর নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ১ মার্চ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়নে জনগণকে নৌকার পক্ষেই রায় দিতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী
সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজে গেলে দেখা যায়, দুটি ভবনেরই নির্মাণ কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। কলেজের পুরো মাঠ ঠিকাদারের দখলে। চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী। স্নাতকের একমাত্র একাডেমিক ভবনটিতে বসবাস করছেন ঠিকাদারের লোকজন। কয়েকটি শ্রেণিকক্ষে রড, সিমেন্টসহ জিনিসপত্র রাখা। একটি শ্রেণিকক্ষে চলছে রান্নার কাজ। তিন তলা পুরো ভবনেই ঠিকাদারের দখলে। শিক্ষার্থীরা জানান, দুই বছরের বেশী সময় ধরে এমন অবস্থা কলেজের। কিন্তু অদৃশ্য কারণে নীরব রয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
স্নাতক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ, আজিজুল হক, পিপুল খান বলেন,‘আমরা স্নাতক প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করলাম। কিন্তু একদিনও পাঠদান নিতে পারিনি। কারণ দুই বছরের বেশী সময় ধরে স্নাতক ভবনটি ঠিকাদারের দখলে। এ নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ আজ পর্যন্ত কোনো রকম ব্যবস্থা নেয়নি। তাই স্নাতকের শিক্ষার্থীরা কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ভবনটি দখল মুক্ত করে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তামান্না এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি পলাশ মিয়া জানান, ‘আমার লোকজন ভবনে বসবাস করছেন এটা সত্য। কিন্তু আমরা তো কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেই থাকছি। এ বিষয়ে আমাদের কিছু না বলে প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলেন ‘
মদন সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘স্নাতক ভবনে ঠিকাদারের লোকজন বসবাস করছে। এ জন্য ঠিকাদারের লোকজনদের আমি ডেকেছিলাম। তারা বলছে ছাদ ঢালাই শেষ হলেই স্নাতক ভবনটি ছেড়ে দেবে। কলেজের মাঠে দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারের লোকজনকে বলব মাঠ যেন দ্রুত পরিষ্কার করে দেয়।’