গুচ্ছে থাকবে না জবি, ২ এপ্রিলের মধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তির আল্টিমেটাম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় (জিএসটি গুচ্ছে) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করবে না বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক  অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বুধবার (২৯ মার্চ) আমাদের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে গৃহীত সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অর্থাৎ গুচ্ছে থাকবে না জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

এসময় তিনি আরো বলেন, আমরা আগামী ২ এপ্রিলের মধ্যে স্বতন্ত্র ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রদান করতে বলেছি। অন্যথায় ৩ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবে শিক্ষকরা। এ বিষয়ে সভা শেষে উপাচার্য বরাবর লিখিত দাবিও জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। 

লিখিত দাবিতে বলা হয়েছে, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনাল সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে এবং ইতোমধ্যে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন ও করেছে। এমতাবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী দুই এপ্রিলের মধ্যে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে ভর্তি কমিটি গঠনসহ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রদানেরও দাবি জানান শিক্ষকরা। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, আমরা আগের সিদ্ধান্তেই অনড় আছি। গুচ্ছ পদ্ধতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে৷ আমরা আজও মিটিং শেষে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি আগামী ২ এপ্রিলের মধ্যে নিজস্ব ব্যবস্থায় ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি দিতে। প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছে দ্রুত একটি মিটিং ডেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে। যদি নির্ধারিত সময়ে দাবি বাস্তবায়িত না হয় আমরা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি দিব। 

এর আগে, গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যেতে বেশ কয়েক দফা দাবি জানানোর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক সমিতি চলতি মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা জানায়। একই সিদ্ধান্ত জানায় কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষক সমিতি। তবে, একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট এবং শিক্ষক সমিতিগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে এখনো চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বিক ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ করতে ২০২০-২০২১ সেশন থেকে শুরু হয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা। স্বায়ত্তশাসিত ও বিশেষায়িত ছাড়া প্রথমবার ২০ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শুরু হরেও পরের বছর থেকে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে শুরু হয় এ ভর্তি প্রক্রিয়া। এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য বিবেচনায় যতটুকু ইতিবাচক আশার সঞ্চার করার কথা ছিল দুই সেশনে ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে তার চেয়েও বেশি হতাশার সৃষ্টি করায় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথাও আসে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতি থেকে। 

শিক্ষক সমিতিগুলোর সদস্যরা বলছেন, ভর্তিতে দীর্ঘ-সময়ক্ষেপণ, শিক্ষার্থীদের হয়রানি, সেশনজট, ফলাফল সংক্রান্ত জটিলতা এবং গুচ্ছ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকাসহ বিবিধ নেতিবাচক বিষয়ের সমাধান হওয়া দরকার। পাশাপাশি তারা মনে করেন, গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়াটি আরও পরিকল্পিত হওয়া উচিৎ। সেজন্য চলমান কৃষি গুচ্ছের মতো করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আলাদা, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আলাদা ভর্তি প্রক্রিয়া বা পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথাও জানান তারা। শিক্ষার্থীদের সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে বিষয় প্রদানের পাশাপাশি গুচ্ছের চলমান অব্যবস্থাপনার সমাধান চান শিক্ষকরা।

 


সর্বশেষ সংবাদ