ইবিতে ‘র্যাগিং’ বন্ধ করতে চায় ছাত্রলীগ
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:৩৪ PM , আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:৫৪ PM
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘র্যাগিং’ নামক কালো দাগ মুছে দিতে চায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগ। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের র্যাগিং নিয়ে বিরাজ করা ভীতি ও আতংক দূর করতে এবং তাদের মাঝে এ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদযাত্রা করেছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শাখা র্যাগিং-রেসিজম ও যৌন হয়রানি রোধে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পদযাত্রা করে শাখা ছাত্রলীগ। এ দিন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে র্যাগিং বিরোধী পদযাত্রার সূচনা করা হয়।
মিছিলটি দলীয় টেন্টের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত, সাধারণ সহ-সভাপতি তন্ময় সাহা টনি, বনি আমিন, মামুনুর রশিদ, রাকিবুল ইসলামসহ শতাধিক নেতা-কর্মী শোভাযাত্রায় অংশ নেনে।
সমাবেশে ছাত্রলীগ নেতারা র্যাগিংয়ের দায়ে নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃষ্টি হওয়া ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে বলেন, সিনিয়র জুনিয়রের মাঝে পরিচিত হওয়ার এটা কোন উপযুক্ত ও কার্যকরী পন্থা নয়। অবিলম্বে র্যাগিং নামক কুরুচিপূর্ণ মানসিকতা থেকে শিক্ষার্থীদের বেরিয়ে আসতে হবে।
এ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় মাঝে মধ্যে খুলতো, বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ থাকতো। ছাত্রদল ও শিবিরের লড়াইয়ে সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভুক্তভোগী হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় শিক্ষার পরিবেশ রক্ষার জন্য রাজপথে থেকেছে।
পদযাত্রার সমাপনী বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত জানান, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরিত করার জন্য যে চ্যালেঞ্জ তাকে স্বাগত জানিয়ে ইবি শাখা সামনে আধুনিক, উন্নত, বিজ্ঞানমনস্ক একটি যুগোপযোগী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ছাত্রলীগ।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবির) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত নবীন ছাত্রী ফুলপরীকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তাবাসসুমসহ কয়েকজন। নির্যাতনের পরের দিন ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী।
সে সময় নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী জানিয়েছিলেন, ৪ ঘণ্টা ধরে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দিচ্ছিল আর এর ফাঁকে ফাঁকে শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছিল। নির্যাতনের একপর্যায়ে বিবস্ত্র করে ভিডিওধারণ করা হয়। তখন কাঁদতে কাঁদতে আমি পা ধরে ক্ষমা চাইলেও তারা কোনো কথা শোনেননি। গণরুমে এ সময় উপস্থিত সাধারণ ছাত্রীরাও কোনো কথা বলেননি। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে; যা উচ্চ আদালতের কাছে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আদালত এ নিয়ে জানিয়েছেন, এতে হল প্রভোস্ট-প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে।